• 28 Apr, 2024

উপকূলের বন উজাড় করে পুকুর তৈরির অভিযোগ

উপকূলের বন উজাড় করে পুকুর তৈরির অভিযোগ

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতিবছরই সমুদ্র গর্ভে বিলীন হচ্ছে উপকূলের বনাঞ্চল।

এ অবস্থায় প্রকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কৃত্রিমভাবে বন উজাড় করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ঘটনাটি ঘটছে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর কুয়াকাটার গঙ্গামতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের। 

এই বনাঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির শতবর্ষী গাছ ও নানা জাতের চারা রয়েছে। কিন্তু দিন যাবৎ এক্সকাভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলে বনের ভেতরে মাটি কেটে পুকুর তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে। প্রভাবশালী এই রেঞ্জ কর্মকর্তার হাত থেকে গঙ্গামতির সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বাগান ও মাটি রক্ষার দাবি স্থানীয়দের। 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ কুয়াকাটার গঙ্গামতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কেওড়া, আকাশমনি, বাইং, ঝাউসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতবর্ষী গাছ ও চারাগুলো এক্সকাভেটর দিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বনের ভেতরে মাটি কাটার কারণে বড় বড় পুকুর সৃষ্টি হয়েছে। কোটি টাকার বিনিময়ে বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি চক্র বন থেকে মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে বলেও জানান স্থানীয়রা। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুরে আলম তালুকদার  বলেন, মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি চক্র বন থেকে মাটি কেটে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে। কেটে নেওয়া মাটি বাঁধ নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার লিখত অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাইনি আমরা।

dhakapost

অপর স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালামদ  বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্য থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের যোগসাজশে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গাছ কেটে মাটি উত্তোলন করছে চক্রটি। এতে প্রতিবাদ করলে বন বিভাগ থেকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ তাদের। এ বিষয়ে সঠিক তদন্তের জন্য বিভিন্নস্থানে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাইনি তারা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ২০০৭ সালের সিডরের সময় এই বনাঞ্চল বুক পেতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করছে। সিডরে আমি আমার দুই সন্তান হারিয়েছে। এভাবে যদি বন ধ্বংস করা হয় তাহলে সামনে যে কি অবস্থা হবে তা ভাবতে কষ্ট হচ্ছে । এই সব অসাধু কর্মকর্তারা ঝড়-বন্যার সময় তো আর উপকূলে থাকে না। তখন তো আমাদেরই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়। তাই দ্রুত মাটি কাটা বন্ধসহ দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ  বলেন, আমি এ বিষয় কোনো মতামত দিতে চাই না। তবে আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন বিভাগের ভূমি রক্ষায় প্রশাসন বদ্ধ পরিকর। যাতে আর এক ইঞ্চি মাটিও কাটা না হয় সে বিষয় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।