• 29 Mar, 2024

স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার : সাংবাদিকদের ঐক্যের বিকল্প নেই!

স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার : সাংবাদিকদের ঐক্যের বিকল্প নেই!

কাজী হাফিজুর রহমান, সম্পাদক, সাপ্তাহিক নড়াইলকণ্ঠ: আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। এ দিবসে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। এদিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগৃহিত তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ছোট একটি লেখা পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম।

‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি” অর্থাৎ “Shaping a Future of Rights : Freedom of Expression as a driver for all other Human Rights” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ০৩রা মে বুধবার বিশ্বব্যাপী পালিত হতে যাচ্ছে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৩’। 

প্রেক্ষাপট : ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম’ দিবস/ ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম’ ডে:
ইউনেস্কোর (টঘঊঝঈঙ) সাধারণ সম্মেলনের সুপারিশ অনুসারে ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস প্রতিষ্ঠিত হয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং তাদের দায়িত্ব পালনে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি তুলে ধরার জন্য দিবসটি তৈরি করা হয়েছিল।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস প্রতিষ্ঠার ধারণাটি প্রথম প্রস্তাব করা হয়েছিল ১৯৯১ সালে আফ্রিকান সাংবাদিকদের একটি দল যারা একটি স্বাধীন এবং বহুত্ববাদী সংবাদ প্রচারের জন্য ইউনেস্কোর সেমিনারে নামিবিয়াতে জড়ো হয়েছিল। তারা বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতা উদযাপন ও রক্ষার জন্য এই দিনটি অর্থাৎ ৩রা মে দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরামর্শ দেন।

প্রস্তাবটি পরে ইউনেস্কোর সাধারণ সম্মেলনের দ্বারা অনুমোদিত হয় এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৯৩ সালে ৩রা মেকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ঘোষণা করে। তারপর থেকে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরার জন্য প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়।

দিবসের তাৎপর্য :  
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার গুরুত্ব এবং গণতান্ত্রিক সমাজে একটি মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার একটি অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কয়েকটি মূল কারণ এখানে দেওয়া উল্লেখ করছি:  

সাংবাদিকদের সুরক্ষা : 
বিশ্ব সংবাদপত্র স্বাধীনতা দিবস সেন্সরশিপ, ভয়ভীতি এবং সহিংসতাসহ তাদের দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকরা যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায়। এটি সাংবাদিকদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এবং নিশ্চিত করে যে তারা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করতে পারে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করা: 
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস হল মতপ্রকাশের স্বাধীনতার গুরুত্বের একটি অনুস্মারক, যা মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার ১৯ অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত একটি মৌলিক মানবাধিকার। এটি এই অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এবং প্রত্যেকের সেন্সরশিপ বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে তা নিশ্চিত করা।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রচার: 
সরকার এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রচারের জন্য একটি মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম অপরিহার্য। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে এবং জনগণের সঠিক ও নিরপেক্ষ তথ্যের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে সাংবাদিকরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা তুলে ধরে।

গণতন্ত্র লালন-পালন: 
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস গণতান্ত্রিক সমাজের প্রতিপালন ও বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে এবং তাদের সরকার ও সমাজ সম্পর্কে অবগত সিদ্ধান্ত নিতে নাগরিকদের প্রয়োাজনীয় তথ্যের অ্যাক্সেস রয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য একটি মুক্ত ও স্বাধীন মিডিয়া অপরিহার্য। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার গুরুত্ব এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা এবং একটি মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যম প্রচারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, গণতান্ত্রিক সমাজে সাংবাদিকতা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকার রক্ষার গুরুত্ব।

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা সম্পর্কে বাংলাদেশ সংবিধানে যা বলা হয়েছে , তাহলো :    
সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদ : সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘‘মৌলিক অধিকারের সহিত অসামঞ্জস্য আইন বাতিল হইবে”। এ বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উচ্চ আদালতের নাই। এই অনুচ্ছেদের (১) এই ভাগের বিধানাবলীর সহিত অসমঞ্জস সকল প্রচলিত আইন যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, এই সংবিধান-প্রবর্তন হইতে সেই সকল আইনের ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে। (২) রাষ্ট্র এই ভাগের কোন বিধানের সহিত অসমঞ্জস কোন আইন প্রণয়ন করিবেন না এবং অনুরূপ কোন আইন প্রণীত হইলে তাহা এই ভাগের কোন বিধানের সহিত যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইয়া যাইবে। ১[(৩) সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত সংশোধনের ক্ষেত্রে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।]

সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক, বাক-স্বাধীনতা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন 
১৯৭০ এর নির্বাচনের পূর্বে বঙ্গবন্ধু, তাঁর দল আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকে পাকিস্তানের পরবর্তী সংবিধান রচনার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৭০ এর নির্বাচনের উদ্দেশ্য ছিল, পাকিস্তানের অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন ও পাকিস্তানের সংবিধান রচনা করার জন্য সাংবিধানিক কাউন্সিল' গঠন করা। কিন্তু, পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ ভুট্টো ও সামরিক জেনারেল ইয়াহিয়া খান বাঙালির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে উল্টো এদেশ জুড়ে গণহত্যা চালায়। ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করা হয়। তারপর নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাত্র ১০ মাসের মাথায় ১৯৭২ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের সংবিধান সাংবিধানিক কাউন্সিলে পাস করা হয়। ১৫৩ অনুচ্ছেদের এই সংবিধান পৃথিবীর কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে সামনে আসে। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে একটা লিখিত সংবিধান গ্রহণ করার কৃতিত্ব বঙ্গবন্ধু সরকারের। সেই সময়ে বিশ্বব্যাপী যাঁরা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন তাঁরা সবাই স্বীকার করেন, এই সংবিধানের বহু অনুচ্ছেদে মানুষের চিন্তা, বিবেক ও মত-প্রকাশের স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে তা অনন্য। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের উদাহরণ এখানে টানা যায়।  

৩৯ অনুচ্ছেদের শিরোনাম করা হয়েছে, "চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক-স্বাধীনতা"
৩৯। (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল (২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক,  জনশৃঙ্খলা, শালীনতা ও নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংগঠনের প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে :-
(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং
(খ) সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হইল।

এই হলো দেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে ব্যক্তির চিন্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা। এই অনুচ্ছেদের দ্বিতীয় অংশ সকল ঘটনার উৎস। এই অংশে এমন কিছু শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যার বহুমাত্রিক অর্থ। একে প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগ অপপ্রয়োগ করতে পারে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা তার অন্তরায় হতে পারে। ৩৯ এর (২) ধারা (ক) ও (খ) কে ব্যাহত করে বা করতে পারে। এটা এক ধরনের সংঘাত। আমাদের উচ্চ আদালতের বহু আগেই উচিত ছিল, এই সংঘাত নিরসনে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা প্রদান করা।

'নৈতিকতা', 'শালীনতা', 'বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক', 'রাষ্ট্রের নিরাপত্তা' ইত্যাদি বিষয়গুলোর সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে পরবর্তীতে আরো কিছু আইন তৈরি করা হযয়েছে। যদিও ৩৯ অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যটিতে ''সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হইল" বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাহলে সংবাদপত্রের মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা নামক আইন কী করে প্রয়োগ করা যায়? উচ্চ আদালতের ব্যাখ্যা নেওয়া হয়েছে কিনা? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের ২ ধারার ''ক" ও ''খ" উপধারার স্পষ্ট লংঘন বলে প্রতীয়মান হয়।

সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ''মৌলিক অধিকারের সহিত অসামঞ্জস্য আইন বাতিল হইবে"। এ বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উচ্চ আদালতের নাই। দেশের সংবিধান রক্ষা করার দায়িত্ব এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয়ে সৃষ্টি হলে তা, দেখার কথা আদালতের। সংবিধান সে দায়িত্ব আদালতকে প্রদান করেছে। ইতিপূর্বে বাংলাদেশের বেশ কিছু বিষয়ে আদালতকে পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। পঞ্চম সংশোধনীর সংক্রান্ত বিষয়েগুলোতে আদালত ভূমিকা পালন করেছে। আদালতের উচিত, মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এমনই কিছু সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা তৈরি করা।

আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। যেখানে একই জায়গায় ৩৯ অনুচ্ছেদের দ্বিতীয় অংশে যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে তার ভেতর থেকেই ডিজিটাল আইনের জন্ম হয়েছে। যে কারণে ৩৯ অনুচ্ছেদের এই দ্বিতীয় অংশটি সংশোধিত হওয়া উচিত অথবা সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ সবারই এ বিষয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার।  

এবার ফিরে আসি অন্য প্রসঙ্গে:  
সংবাদপত্রের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল কনটেন্ট প্রচারের বিষয়ে নতুন করে বিতর্কেও কোনো সুযোগ নেই বলে আমরা মনে করি।
সংবাদপত্রের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে টকশো ও ভিডিও কনটেন্ট প্রচার করলে সেটি ডিক্লারেশনের বরখেলাপ হয় বলে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে থেকে জেনেছি। তবে আমরা মনে করি, বর্তমানে প্রিন্ট আর ডিজিটাল সমন্বয়ের মাধ্যমেই সংবাদপত্রের অগ্রযাত্রা নিহিত রয়েছে। কারণ সারাবিশ্বে ডিজিটাল বিপ্লবের প্রভাব সংবাদপত্রশিল্পকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে এাঁ অস্বীকার করা কোন উপায় নেই।

আমরা মনে করি, সমকালীনতাকে ধারণ করে বিশ্বজুড়ে সংবাদপত্রগুলো নতুন নতুন ডিজিটাল কনটেন্ট সংযুক্ত করে পাঠক ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন পাঠক তৈরির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ সরকারও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে পত্রিকার জন্য জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৭ (সংশোধিত-২০২০) এর অধীনে ‘অনলাইন নিউজপোর্টালের জন্য নিবন্ধন’ প্রক্রিয়া চালু করেছে। এরই মধ্যে দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণসহ শতাধিক অনলাইন নিউজপোর্টালের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

মহামারি, ইক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ ও নানা রাজনৈতিক হানাহানির কারণে বিশ্ব পরিস্থিতি যে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করেছে, প্রিন্ট মিডিয়াকে তা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়া প্রাসঙ্গিক হলেও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উত্থানকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। পাঠককে এখন শুধু প্রিন্ট পত্রিকা বা ই-পেপার দিয়ে খুশি করা যায় না। বরং অডিও-ভিডিও ফরম্যাটে নতুন কনটেন্ট, সংবাদ, সাক্ষাৎকার, ফিচার ও সংবাদের বিশ্নেষণভিত্তিক আলোচনা দিতে হচ্ছে। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার রয়েছে সরকারের। প্রিন্ট মিডিয়া পাঠকের শেষ আস্থা হলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশের বর্তমান সময়ে প্রিন্ট মিডিয়ার ওয়েবপোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়াকেও সমান তালে বিবেচনায় নিতে হবে। প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রাসঙ্গিক সংবাদের ব্যাখ্যা, বিশ্নেষণ, গবেষণা ও মতামত সম্বলিত ডিজিটাল কনটেন্ট অনলাইন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঠকের কাছে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করাও সকল দৈনিক, সাপ্তাহিকসহ অন্যান্য পত্রিকার অনুষঙ্গ।

পরিশেষে বলতে চাই, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই শতকের সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায়, আর সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং নজরদারিও ঠেকেছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আমরা মুক্ত, সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও ধারণার অবাধ আদান-প্রদান ত্বরান্বিত করতে স্বাধীন গণমাধ্যমের অত্যাবশ্যকীয় ভূমিকার বিষয়ে জোর দিচ্ছি। ধন্যবাদ।