• 07 May, 2024

শ্রমআইন লঙ্ঘনে নোবেল বিজয়ী ইউনূসের কারাদণ্ড

শ্রমআইন লঙ্ঘনে নোবেল বিজয়ী ইউনূসের কারাদণ্ড

শান্তির নোবেলজয়ী থেকে দণ্ডিত আসামি : ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে।

ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য দেশের একমাত্র অর্থনীতিবিদ হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই ব্যক্তিই গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান হিসেবে ‘শ্রমিক ঠকানোর’ অভিযোগে শ্রমআইন লঙ্ঘনের মামলায় ৬ মাসের দণ্ডিত আসামি হলেন। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ মামলায় ড. ইউনূসসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। তবে রায় ঘোষণার ৫ মিনিটের মাথায় আপিলের শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের জামিন দেন একই আদালত। এর ফলে কাউকে এখনই জেলে যেতে হচ্ছে না।

ড. ইউনূসসহ চার আসামি আদালতে হাজির হন গতকাল দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে। দুপুর ২টা ১২ মিনিটে বিচারক এজলাসে বসেন। ২টা ১৫ মিনিটে অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মোট ৮৪ পৃষ্ঠার রায়ের মূল অংশ পড়া শুরু করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আসামিপক্ষ (ইউনূসের আইনজীবীরা) এক নম্বর আসামির বিষয়ে প্রশংসাসূচক বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। যেখানে তাকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা নোবেলজয়ী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব বলা হয়েছে। কিন্তু এ আদালতে নোবেলজয়ী ইউনূসের বিচার হচ্ছে না, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যানের বিচার হচ্ছে।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমআইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত উল্লেখ করে শ্রম আইনের ৩০৩ এর ৩ ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩০৭ ধারায় তাদের সবাইকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন আদালত। এছাড়া রায়ে গ্রামীণ টেলিকমের সব শ্রমিককে তাদের ন্যায্য পাওনা ৩০ দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, যে দোষ আমি করিনি, সে দোষে আমাকে সাজা দেয়া হয়েছে।

এটাকে ন্যায়বিচার যদি বলতে চান, তাহলে বলতে পারেন। আজ আনন্দের দিনে আঘাতটা পেলাম। রায় ঘোষণা শুনতে আমার অনেক বিদেশি বন্ধু-বান্ধব এসেছে। যাদের সঙ্গে বহুদিন দেখা হয়নি। আজ তাদের দেখে খুব আনন্দ লাগছিল। সবাই রায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এই সাজা আমাদের কপালে ছিল।

এ রায়ে ড. ইউনূস ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দাবি করে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, লেবার কোর্টের ইতিহাসে এত তাড়াতাড়ি শুনানি দেখিনি। এক মাসে ৯/১০টা ডেট দিয়েছেন। নিজেরা এজলাস তৈরি করে এখানে তড়িঘড়ি করে শুনানি করে সাজা দেয়া হয়েছে। অন্যায় এই রায়ে আমরা বিক্ষুব্ধ। এই রায় জনগণের বিরুদ্ধে এবং আইনবিরোধী। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ কোনো কিছুই প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা ১০৯টা কন্ট্রাডিকশন (অসঙ্গতি) দিয়েছি। একটা দিলেই তো খুনের আসামি পর্যন্ত জামিন পেয়ে যায়। সেখানে ১০৯টা অসঙ্গতিও আদালত আমলে নেয়নি। আপিলের শর্তে আমরা জামিন নিয়েছি। নির্দিষ্ট সময়ে আপিল করব।

তিনি আরো বলেন, নিয়ম হচ্ছে ওপেন কোর্টে পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্ট করা। যখনই দেখা গেল তার (বিচারকের)

জাজমেন্টে প্রতি লাইনে ভুল! তখনই তিনি সরাসরি জাজমেন্ট না পড়ে আদেশ দিয়েছেন। নিয়ম হচ্ছে আসামিপক্ষকে পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্ট পড়ে শোনানো।

অন্যদিকে, কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তর পক্ষের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, তারা (আসামিদের আইনজীবীরা) শুধু বলেন ড. ইউনূস নোবেল বিজয়ী। নোবেল বিজয়ী হিসেবে তো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তিনি প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে ‘লেবার ল’ ভায়োলেট করেছেন। যা আদালত আমলে নিয়েছেন। নোবেলজয়ী হলেও তিনি আদালত ও আইনের ঊর্ধ্বে নন।

তিনি বলেন, আদালত আসামিদের শোকজ করেছেন, তারা জবাব দিয়েছেন। কিন্তু আদালত তাদের জবাব সন্তোষজনক মনে করেননি। তাদের যেসব  ছিল তা তারা সংশোধন করেননি বরং সন্দেহাতীতভাবে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, তারা শ্রমআইন লঙ্ঘন করেছেন। এছাড়া রায় চলাকালীন অবস্থায় ড. ইউনূসের পক্ষের আইনজীবীরা মক্কেলের জন্য বিচারককে বারবার ডিস্টার্ব করাকে বিচারিক অশোভনীয় বলে মন্তব্য করেন তিনি

‘ন্যায়বিচারবঞ্চিত হয়েছেন ড. ইউনুস’ : এদিকে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের রায় শুনতে আদালতে ভিড় জমান নানা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সুশীল সমাজ, বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ উৎসুক জনতা। রায় ঘোষণা শেষে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করে যারা ব্যবসাবাণিজ্য করছে, বিদেশে পাচার করছে, যারা শ্রমিকদের প্রতি অন্যায়-অবিচার করছে, আন্তর্জাতিক শ্রমআইন লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখি না। কিন্তু একজন ব্যক্তি যখন দেশের সম্মান বাড়াতে কাজ করছেন, তখন আমরা তাকে বিচারের নামে হয়রানি করতে দেখছি। নির্দেশিত এ রায়ে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ড. ইউনূস।

বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববরেণ্য একজন মানুষ। তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। অথচ বাংলাদেশে তিনি বারবার নির্যাতিত হচ্ছেন।  আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করে একজন বিশ্ববরেণ্য মানুষকে সাজা দেয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। এই সাজা কোনোভাবেই আইনসম্মত হয়নি। এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর জন্য ড. ইউনূস কোনোভাবে চ্যালেঞ্জে পরিণত হতে পারেন, সে আশঙ্কায় হয়রানিমূলক ও প্রহসনের মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় তাকে আসামি করা হয়েছে।

অ্যামন্যাস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মহাসচিব মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেন, ড. ইউনূসকে পৃথিবীর সবাই ভালো করে চেনে। তিনি কী কাজ করেন তা ভালো করে জানে। বিদেশের কেউ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে প্রশংসা করছেন না বরং সবাই নিন্দা করছেন। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সরকারকে আগে থেকেই অনুরোধ করেছেন যেন তার বিরুদ্ধে এই চার্জগুলো না আনা হয়। সরকার সে অনুরোধ শোনেনি। তাই এই রায়ে ড. ইউনূসের অসম্মান হবে না বরং দেশের আইনের অসম্মান হবে, আদালতের অসম্মান হবে।

রায় প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, যেভাবে শ্রম আদালত বসেছে, অস্বাভাবিক ঘন ঘন শুনানি হয়েছে, অস্বাভাবিক দ্রুততায় রায় হয়েছে। আমাদের সন্দেহ আছে, এটা ন্যায়বিচার হয়েছে কিনা। ড. ইউনূসের বিচার চলাকালে এবং এর আগে ক্ষমতার সর্বোচ্চপর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে যা ছিল : ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ আনা হয়, শ্রমআইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি দেয়া, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেয়া হয় না। এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেয়া হয় না। এজন্য মামলায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এসব ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বিধান রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে ইউনূসের জবাব : মামলার অভিযোগের জবাবে গত বছরের ৯ নভেম্বর আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে ড. ইউনূসসহ চারজন বিবাদী লিখিতভাবে বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী। কারণ, গ্রামীণ টেলিকম যেসব ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, সেগুলো চুক্তিভিত্তিক। তবে গ্রামীণ টেলিকমের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ী কর্মীর মতো ভবিষ্যৎ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড), আনুতোষিক (গ্র্যাচুইটি), অর্জিত ছুটি ও অবসরকালীন ছুটি দেয়া হয়। মামলায় নিয়োগ স্থায়ী না করার অভিযোগ শ্রমআইনের বিধিতে পড়ে না। তা প্রশাসনিক ও দেওয়ানি মামলার বিষয়। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারা অনুযায়ী একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়, সামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

এদিকে গত বছরের ৬ জুন আদালত এ মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর ৮ মে শ্রমআইন লঙ্ঘনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করেন আপিল বিভাগ। পরে ২২ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২৪ ডিসেম্বর এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য গতকালকের দিন ধার্য করেন আদালত।

 ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ব্যর্থ চেষ্টার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ইউনূস। জরুরি অবস্থার মধ্যে বড় সব দল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে বাধ্য হলেও তাকে নতুন দল গঠনের সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল তখন, যা ছিল ইউনূসের প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ।

এরপর নরওয়ের টেলিভিশনে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে প্রচারিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে গ্রামীণ ব্যাংককে দেয়া বিদেশি অর্থ স্থানান্তরের অভিযোগ ওঠে ইউনূসের বিরুদ্ধে। সেই প্রামাণ্যচিত্র নতুন করে সমালোচনার কেন্দ্রে নিয়ে যায় গ্রামীণ ব্যাংক ও ইউনূসকে। ঋণ দেয়ার পর গ্রামীণ ব্যাংক গ্রহীতাদের কাছ থেকে যে প্রক্রিয়ায় কিস্তি আদায় করে, তা নিয়েও শুরু হয় সমালোচনা। দেশে ও বিদেশে বাম ধারার অনেক বুদ্ধিজীবী দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুদ্র ঋণের বিরুদ্ধে বলে আসছেন। তাদের মতে, দারিদ্র্য বিমোচনে এই ঋণের ভূমিকা প্রমাণিত নয়। আর গ্রামবাংলায় সুদখোর মহাজনরা সব সময়ই পরিচিত ছিলেন ‘রক্তচোষা’ হিসেবে। সেই বিবেচনা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সে সময় ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘গরিব মানুষের রক্ত চুষে খেলে ধরা খেতে হয়।’

সরকারের অর্থায়ন ও সহযোগিতায় গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইউনূস এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ২০১১ সালে অবসরের বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় তার পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বছর মার্চে ৭১ বছর বয়সি ইউনূসকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অব্যাহতি দেয়। ইউনূস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে যান এবং দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আপিল বিভাগের আদেশে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্তৃত্ব হারান। এরপরও তাকে পদে রাখার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করে। ক্লিনটন পরিবারের সঙ্গে ইউনূসের ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের বিষয়টি সব মহলেরই জানা। গ্রামীণ ব্যাংকের পদ নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই হিলারি ক্লিনটন এ ব্যাপারে সরকারকে চাপ দিয়েছিলেন। অন্যদিকে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ- পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ঝুলে যাওয়ার পেছনেও ইউনূসের হাত ছিল। ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী বন্ধুদের তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। তবে ইউনূস সব সময়ই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।