• 27 Apr, 2024

ঘন কুয়াশায় দিল্লিতে ৮৪টি ফ্লাইট বাতিল, বিলম্বিত আরও দেড় শতাধিক

ঘন কুয়াশায় দিল্লিতে ৮৪টি ফ্লাইট বাতিল, বিলম্বিত আরও দেড় শতাধিক

ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। এতে করে সেখানকার দৃশ্যমানতা অনেকটাই কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে প্লেনের শিডিউলে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের বিপর্যয়।

ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় কারণে দিল্লি বিমানবন্দরে ৮৪টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বিলম্বিত হয়েছে আরও দেড় শতাধিক ফ্লাইট। এছাড়া ঘন কুয়াশার কারণে দিল্লিতে ভ্রমণ বা চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি ও উত্তর ভারতের কিছু অংশ ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন রয়েছে এবং এখান থেকে দেশের অন্যান্য অংশে ফ্লাইট ও ট্রেন চলাচলে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। এছাড়া দুই সপ্তাহের শীতের ছুটির পরে আজ ভারতের এই রাজধানী শহরে স্কুলগুলোও খুলছে। যদিও তীব্র ঠান্ডার কারণে স্কুলের সময় সীমিত করা হয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, সোমবার ১৮টি ট্রেন বিলম্বিত হয়েছে। এছাড়া দিল্লি বিমানবন্দর ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করেছে। বিমানবন্দরটিতে হাজার হাজার যাত্রী তাদের ফ্লাইটের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হওয়াটা স্বাভাবিক হওয়ায় যাত্রীদের ফ্লাইটের তথ্য সম্পর্কে আপডেট থাকতে বলা হয়েছে।

ফ্লাইট ট্র্যাকার ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ এর তথ্য অনুযায়ী, দিল্লি বিমানবন্দরে আজ সকালে গড়ে প্রায় এক ঘণ্টা বিলম্বে ১৬৮টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে এবং ৮৪টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে বিলম্ব কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। একজন যাত্রী দাবি করেছেন, ফ্লাইটে গোয়া যাওয়ার জন্য তাকে ১৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে।

ইন্ডিগো, স্পাইসজেট এবং ভিস্তারার মতো প্রধান বিমান সংস্থাগুলো বলেছে, দিল্লি এবং কলকাতার খারাপ আবহাওয়া ফ্লাইট চলাচলকে প্রভাবিত করতে পারে। সোমবার ভোরে দিল্লি থেকে কলকাতাগামী একটি ফ্লাইট হায়দ্রাবাদের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় বলে ভিস্তারা জানিয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে রাজধানী দিল্লি। তাপমাত্রার পারদও হাড় কাঁপানো ঠান্ডার কথাই জানান দিচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবারও দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে।

দিল্লি ছাড়াও পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের বিস্তীর্ণ অংশে সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। কম দৃশ্যমানতার কারণে সকালের দিকে গাড়ি চালাতে সমস্যায় পড়েছেন চালকেরা।

এছাড়া ঘন কুয়াশায় দিল্লি বিমানবন্দরে সোমবার ভোর ৩টার দিকে দৃশ্যমানতা শূন্যতে নেমে যায়। পরে অবশ্য তা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। সকাল ৭টা নাগাদ দিল্লি বিমানবন্দরে দৃশ্যমানতা ছিল ৫০ মিটার। রানওয়েতে ২৫০ থেকে ৪০০ মিটারের দৃশ্যমানতা রয়েছে। বিমান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

কুয়াশার কারণে দিল্লির অনেক বিমানই বাতিল করে দিতে হচ্ছে। ফলে দিল্লি বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীরা যেন অবশ্যই বিমানের টিকিট কাটার আগে বা যাত্রা শুরু করার আগে সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে নেন।


এদিকে তীব্র ঠান্ডায় পাঞ্জাবের ১৬টি এবং হরিয়ানার ৮টি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। লুধিয়ানায় তাপমাত্রা ছিল সবচেয়ে কম। সেখানে সোমবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবারের আগে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই মিলবে না। তবে তারপর পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে উত্তর ভারতের কিছু কিছু এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাপমাত্রা খানিকটা বৃদ্ধি পাবে আবার।

অন্যদিকে শৈত্যপ্রবাহের মধ্যেই সোমবার থেকে স্কুল খুলছে দিল্লিতে। তাপমাত্রার গতিবিধি দেখে রাজধানীর স্কুলগুলোতে শীতের ছুটি কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার থেকে পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করে স্কুল খুলছে।

তবে সকাল ৯টার আগে কোনও স্কুল শুরু হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। আর বিকেল ৫টার পরেও স্কুল চলবে না।