• 13 Oct, 2025

রূপগঞ্জে বাটুল সিন্ডিকেটে জিম্মি মুরগী বাজার!

রূপগঞ্জে বাটুল সিন্ডিকেটে জিম্মি মুরগী বাজার!

নড়াইলের রূপগঞ্জ মুরগী বাজার এখন এক ব্যক্তির সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে — এমন অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসছে প্রান্তিক মুরগী ব্যবসায়ীরা। ওজনে কম, দামে বেশি এবং জোর করে দোকান দখল—সব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মুরগী ব্যবসায়ী বাটুল মজুমদার। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের নাকের ডগায় তিনি গড়ে তুলেছেন একক আধিপত্য আর ভয়ভীতি নির্ভর ব্যবসা সাম্রাজ্য।

নিজস্ব প্রতিবেদক : নড়াইলের রূপগঞ্জ মুরগী বাজারে চলছে ‘বাটুল মজুমদার সিন্ডিকেটের’ একচ্ছত্র আধিপত্য। ক্ষুদ্র প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের অভিযোগ—ওজনে কারসাজি, দামে অতিরিক্ত মুনাফা, অসুস্থ মুরগী বিক্রি এবং দোকান দখলের মাধ্যমে পুরো বাজারকেই জিম্মি করে রেখেছেন বাটুল ও তার সহযোগীরা। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময়ের ফুটপাতের ব্যবসায়ী বাটুল মজুমদার বর্তমানে কয়েক কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে তিনি রূপগঞ্জ মুরগী বাজারের ১১টি দোকানের মধ্যে ৯টি নিজের দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। 

শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, বাকিতে টাকা পাওনার মিথ্যা অজুহাতে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দোকান উচ্ছেদ করে নিয়েছেন বাটুল। 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বিপুল, রাকিব, ইয়াসিন, মশিয়ার ও হানিফ মোল্লা জানান—২০ বছর আগে জেলা প্রশাসনের মৌখিক বরাদ্দে তাঁরা বাজারে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। এখন বাটুলের আধিপত্যে তাঁরা বেকার হওয়ার মুখে। 

মুরগি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, “বাটুল মজুমদার প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। যে কোনো সময় আমাকে উচ্ছেদ করতে পারে। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

অন্য ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারের মুরগির দামে সবসময়ই বাটুলের কারণে ২০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য থাকে। তিনি রোগা ও অসুস্থ মুরগি সরবরাহ করে মুনাফা বাড়ান, আর দেনার ফাঁদে ফেলে পুরনো ব্যবসায়ীদের দোকান দখল করেন। 

এভাবে বাজারে ভয়ভীতি, দখল ও কারসাজির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে এক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। বাটুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ—ওজনে কম দেওয়া, দাম বাড়ানো এবং প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। ইতোমধ্যেই শহরের বিভিন্ন স্থানে তিনি গড়েছেন বাড়ি ও জমির মালিকানা। 

অভিযোগের বিষয়ে বাটুল মজুমদার বলেন, “আমি কাউকে জোর করে উচ্ছেদ করিনি। তারা নিজেরাই দোকান বিক্রি করেছে, আমি কিনেছি।”

রূপগঞ্জ কাঁচাবাজার সমিতির সভাপতি আকরাম হোসেন জানান, “বাজারে ওজনে কারচুপি ও রোগা-মরা মুরগি বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে আমরা একাধিকবার শালিশ করেছি।” 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন,  “আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করি। যদি কারো বিরুদ্ধে ওজনে কারচুপি বা দামের অনিয়ম প্রমাণিত হয়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”