• 19 May, 2024

প্রতিকূলতার মাঝেও নড়াইলে টিকে আছে মৃৎশিল্প

প্রতিকূলতার মাঝেও নড়াইলে টিকে আছে মৃৎশিল্প

অ্যালুমিনিয়াম, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দেশের মৃৎশিল্প। তবে ভিন্ন চিত্র নড়াইল জেলার ১০-১২টি গ্রামে।

প্রতিকূলতার মাঝেও এসব গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবার তাদের পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। এখানকার কুমারদের তৈরি মাটির জিনিসপত্র সরবরাহ হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।

সোমবার (৬ মে) সকালে কথা হয় স্থানীয় মৃৎশিল্পী তপন পালের সঙ্গে। তিনি জানান, গ্রামের প্রতিটি ঘরেই মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিল, কলসি, থালা, বাটি, ফুলের টব, ফুলদানি, ব্যাংক, খাবার টেবিলসহ বিভিন্ন প্রকার সৌখিন সামগ্রী ব্যবহার হতো। কুমারপাড়ায় ছিল কর্মব্যস্ততা। চারদিকে কাঁচাপোড়া মাটির গন্ধ ভেসে আসতো। চাহিদা থাকায় গ্রামীণ হাটবাজারেও সয়লাব ছিল মাটির পাত্রে। সে সময় দেশের অর্থনীতিতে শক্ত ভূমিকা রেখেছে এ শিল্প। তবে এখন তা অতীত। কালের বিবর্তনে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিলের চাহিদা কমেছে।

তবে চাহিদা কমলেও কুমারডাঙ্গা, রতডাঙ্গা, কুন্দশীপালপাড়া, জয়পুর, চোরখালী, রায়গ্রাম, শালনগর, ছোট কালিয়াসহ অন্তত ১০-১২টি গ্রাম এখনও সচল রয়েছে। এ জনপদের পাঁচ শতাধিক কারখানায় তৈরি করা হয় মাটির জিনিসপত্র। এ পেশায় জড়িত রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। মৌসুম শুরু হলে ব্যস্ততাও বেড়ে যায় এদের। পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন নারীরাও। তবে এ কাজে আগের মতো লাভ না থাকলেও বাপ-ঠাকুরদার পেশা টিকিয়ে রাখতে এখনো শিল্পটিকে ধরে রেখেছেন তারা।

লোহাগড়া উপজেলার কুন্দশী গ্রামের গোবিন্দ পাল বলেন, এ গ্রামে মৃৎশিল্পের ইতিহাস শত বছরের। এখানকার কুমারদের তৈরি মাটির জিনিসপত্রের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এখনো। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বাগেরহাট ও খুলনাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারেও বিক্রি হয়।

 

 

একই উপজেলার মধুমতি নদীর পাড়ে কুমারডাঙ্গা গ্রামে অরবিন্দু পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে পানি মিশিয়ে নরম কাদা তৈরি করা হচ্ছে। কেউ-বা মাটির তৈরি জিনিস রোদে শুকানোর কাজ করছেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক) নড়াইলের উপ-ব্যবস্থাপক সোলাইমান হোসেন বলেন, এখানকার মৃৎপাত্রের মান অনেক ভালো। এখন যে কারখানা রয়েছে, তা আরো বড় করার জন্য বিসিক তাদের পাশে থাকবে। মৃৎশিল্পীদের সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে এ শিল্প টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হবে।