• 07 Dec, 2025

“সামনে নয়, পিছনে নয়-একসাথে কাজ করতে চাই: নবাগত ডিসি”

“সামনে নয়, পিছনে নয়-একসাথে কাজ করতে চাই: নবাগত ডিসি”

“সামনে নয়, পিছনেও নয়—আমি পাশে থেকে কাজ করতে চাই”—সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নবাগত জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল সালামের এই উক্তি নড়াইলে প্রশাসন ও গণমাধ্যমের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হওয়ার বার্তা দেয়। জেলার কৃষি, আইন–শৃঙ্খলা, বাজার নিয়ন্ত্রণ, খাসজমি উদ্ধার, অবৈধ বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা তুলে ধরলে তিনি তা মনোযোগ দিয়ে শুনে যৌথভাবে সমাধানের আশ্বাস দেন।

নড়াইলকণ্ঠ:  বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নড়াইল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকন বিশ্বাস। এতে জেলার প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নেন এবং বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার দিক তুলে ধরেন।

সাংবাদিকরা কৃষি নির্ভর জেলা নড়াইলের বিল ইছামতি, রমজানের, শৈলুয়ার বিল, সেঞ্চুুরী, পাটেশ্বরী বিলসহ বিভিন্ন বিলে একফসলি জমিকে বহুফসলি আনার প্রস্তাব রাখেন। পাশাপাশি কয়েক হাজার একর অনাবাদি জমিকে আবাদযোগ্য করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং জোরদার করা, সরকারি খাসজমির তথ্য উন্মুক্ত করা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় সাড়ে ২৭০০ একর জমির অর্ধেকের বেশি বেদখল হওয়ায় তা উদ্ধার করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। এছাড়া অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ, কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ এবং সার সংগ্রহে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০ টাকা বেশি দিতে বাধ্য হওয়ায় এর সমাধান দ্রুত গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

মাছচাষীরা ন্যায্য দর না পাওয়ায় তাদের সমস্যার সমাধান, জেলায় কৃষি মার্কেট না থাকার কারণে কৃষকদের বাণিজ্যিক ক্ষতির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো থাকলেও নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা আরও জোরদার করার অনুরোধ জানান সাংবাদিকরা।

জমি-জমা বিরোধ নিয়ে দাঙ্গা-সংঘর্ষ প্রতিনিয়ত ঘটছে—এই সমস্যাটি বিশেষ নজরে আনার আহ্বান জানানো হয়। শহর থেকে রেলস্টেশনের দূরত্ব অনুযায়ী ইজিভ্যান, অটোরিকশা ও ইজিবাইকের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় একটি বড় সমস্যা-এটিও জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়। শহরের ভেতর বাসস্ট্যান্ড স্থাপন, অনুমোদনহীন টোল আদায় বন্ধ এবং জেলার উন্নয়ন কার্যক্রম টেকসই করতে নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

উপরোল্লেখিত প্রস্তাব ও সমস্যাগুলো উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক অ্যাডভোকেট আলমগীর সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু, কাজী হাফিজুর রহমান, এটিএন বাংলা প্রতিনিধি জহির ঠাকুর, খায়রুল আরেফিন রানা, সাইল ইসলাম তুহিন, অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম, মাহাবুব রশিদ লাভলু, সিরাজুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান জামি, হাফিজুল করিম নিলু, কাজী আশরাফ, সাজ্জাদ আলম খান সজল, অশোক কুন্ডু, হুমায়ূন কবীর রিন্টুসহ অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীরা।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল সালাম সাংবাদিকদের উত্থাপিত সকল সমস্যা, সম্ভাবনা ও সুপারিশ মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তিনি জেলার সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে বিষয়গুলো গভীরভাবে খতিয়ে দেখে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহামুদ আহসান রাসেল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হোসনে আরা তান্নি প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় জেলায় কর্মরত সকল গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।