নড়াইলকণ্ঠ ॥ নড়াইল সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দীপঙ্কর কুমারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় সদর হাসপাতালের সামনে অসহায় ভ্যানচালক মো. ইসমাইল শেখের স্ত্রী ভুক্তভোগী সুমি বেগম তার পরিবার ও প্রতিবেশিদের নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে সুমি বেগম অভিযোগ করে বলেন, “ব্রেস্টে ব্যথা অনুভব করলে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হই। চিকিৎসক ডাঃ দীপঙ্কর কুমার বায়োপসি পরীক্ষা ছাড়াই দ্রুত অপারেশনের নির্দেশ দেন। কেবল ব্লাড টেস্টের ভিত্তিতেই আমার অপারেশন সম্পন্ন করা হয়।”
তিনি আরও জানান, “অপারেশনের পরও ব্যথা ও যন্ত্রণা কমেনি। পরে চিকিৎসক আমাকে তার পছন্দের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলেন। সেখানে বেশি টাকা দাবি করায় আমি অন্যত্র পরীক্ষা করাই। রিপোর্ট নিয়ে গেলে চিকিৎসক তা মুখের ওপর ছুঁড়ে ফেলে ইংরেজিতে কথা বলতে বলতে আমাকে কক্ষে থেকে বের করে দেন।”
পরে সুমি বেগমকে যশোরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, পূর্বের অপারেশনটি ভুলভাবে হওয়ায় তার ইনফেকশন হয়েছে এবং পুনরায় অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।
ভুক্তভোগীর স্বামী ইসমাইল শেখ বলেন, “আমি একজন গরিব ভ্যানচালক। আমার স্ত্রীর ভুল চিকিৎসায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।”
মানববন্ধনে উপস্থিত প্রতিবেশি আয়কর আইনজীবী মো. ইমরান হোসেন বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এমন অভিযোগ অত্যন্ত দুঃখজনক ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”
প্রতিবেশি ফাতেমা বলেন, “ভুল চিকিৎসার কারণে সুমির জীবন বিপন্ন হয়েছে। প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।”
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাঃ দীপঙ্কর কুমার বলেন, ‘ব্রেস্টে ফোঁড়ার অপারেশনের জন্য বায়োপসি পরীক্ষা লাগে না। রোগীর অন্যান্য অভিযোগগুলো মিথ্যা।”
মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে মন্তব্য:
এই ঘটনাটি স্বাস্থ্যসেবা খাতে জবাবদিহি ও মানবিক দায়িত্বের প্রশ্ন তোলে। একজন রোগীর প্রতি অবমাননাকর আচরণ শুধু চিকিৎসা নীতির পরিপন্থী নয়, তা নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকারেরও লঙ্ঘন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন—যাতে জনগণের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি আস্থা অক্ষুণ্ণ থাকে।