• 14 Nov, 2025

নড়াইলে আকবর ফকির হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন : মূল আসামি গ্রেফতার

নড়াইলে আকবর ফকির হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন : মূল আসামি গ্রেফতার

নড়াইলকণ্ঠ: নড়াইল সদর উপজেলার বুড়িখালী এলাকায় আকবর ফকির (৬০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা শাখা ও সদর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি বাবু সরদার (৫৯) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ ভোরে সদর থানাধীন বুড়িখালী সাকিনে তালবাগান এলাকায় বাঁশবাগানের ভিতর থেকে আকবর ফকিরের গলাকাটা ও পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা মরদেহ দেখতে পেয়ে খবর দিলে সকাল ৭টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে নাজির ফকির বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২৮, তারিখ-২৭/০৯/২০২৫, ধারা-৩০২/৩৪ দণ্ডবিধি)।

এরপর জেলা গোয়েন্দা শাখাসহ পুলিশের একাধিক টিম হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি শনাক্তকরণে মাঠে নামে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাত ৭টা ৩০ মিনিটে লোহাগড়া থানাধীন মশাগুনি এলাকায় ব্র্যাক অফিসের সামনে নড়াইল-লোহাগড়া সড়ক থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি বাবু সরদারকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বাবু সরদার হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সে জানায়, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রায় ১০-১২ দিন আগে থেকেই আকবর ফকিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি চাকু এবং স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ২০টি অ্যালার্জির ট্যাবলেট কেনে। হত্যার দিন আকবর ফকিরকে কৌশলে নির্ধারিত স্থানে ডেকে নেয় এবং কোমল পানীয় ‘স্পিড’-এর সঙ্গে ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করায়। এতে আকবর ফকির অচেতন হয়ে পড়লে তাকে গামছার টুকরা দিয়ে হাত-পা গাছে বেঁধে ফেলে এবং চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পরে মরদেহ বিকৃত করার জন্য তার অণ্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ কেটে পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।

হত্যার কারণ জিজ্ঞাসাবাদে বাবু সরদার আরও জানায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছাড়াও নিহত আকবর ফকির দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। এমনকি বাবু সরদারের শ্বাশুড়িকে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং তার কন্যা ও পুত্রবধূর প্রতিও কু-দৃষ্টি দেয়। এসব ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই সে একাই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃত বাবু সরদারকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কারও সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।