• 19 Apr, 2024

যশোর অভয়নগরের সবুজের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের মামলা দায়ের

যশোর অভয়নগরের সবুজের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের মামলা দায়ের

নড়াইলকণ্ঠ ॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া গ্রামের আয়ুব সরদারের ছেলে সবুজ সরদারের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগে সিলেট মেট্রোপলিটন আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি করেছেন সিলেটের শাহ্পরান থানার এক প্রবাসী বাসিন্দা।

মামলার বিবরণে জানাযায়, প্রতারক সবুজ সরদার সিলেটের শাহ্পরাণ থানা এলাকায় এক প্রবাসীর বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে প্রতারক সবুজ বাড়ির মালিকের আস্থা অর্জন করেন। বাড়ির মালিক একজন ইংল্যান্ড প্রবাসী। তাই বিভিন্ন সময়ে টাকা উত্তোলন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন কাজের দ্বায়িত্ব দেন সবুজ সরদারকে। আর সেই দ্বায়িত্ব পেয়ে মালিকের এর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে প্রাইভেট কার কেনার টাকা ও বিভিন্ন কাজের জন্য দেয়া বিপুল পরিমান টাকা আতœসাৎ করেছেন।

এ ঘটনায় প্রতারক সবুজ সরদারের বিরূদ্ধে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় মামলা করেছেন। ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী দেশে আসলে সবুজ সরদার তাকে একটি প্রাইভেট কার কেনার জন্য অনুরোধ করেন। তার কথায় ওই প্রবাসী একটি কার গাড়ী কেনেন। ২০২২ সালের ২৬ জুলাই ইংল্যান্ডে চলে যাবার আগে গাড়ীটি সবুজের হেফাজতে রেখে যান। তাছাড়া জমির খাজনা ও নামজারী করার জন্য সবুজকে ৫ লাখ টাকা দেন। ইংল্যান্ডে গিয়ে ওই প্রবাসী চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ১লাখ ২০ হাজার টাকা, ১৬ জানয়ারি ২০ হাজার টাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি ১লাখ ২০ হাজার টাকা, ২৮ ফেব্রয়ারি ১০ হাজার টাকা সহ বিভিন্ন তারিখে সর্বমোট ৫লাখ টাকা আসামী সবুজের নিকট পাঠান। এসব টাকা পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল মামলার বাদী প্রবাসী এর মামার নিকট। কিন্তু তা—না করে সমদুয় টাকা আতœসাৎ করেন সবুজ সরদার। জমির খাজনা ও নামজারী করে দেয়ার জন্য ৫লাখ টাকা নিয়ে কোন কাজ না করে সমুদয় টাকা আতœসাৎ করেন। এ সব মিলে সবুজ সরদার ১০ লাখ টাকার বেশি আতœসাৎ করেছেন।

এছাড়া আরোও গুরুত্বপূর্ণ দামি কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যান সবুজ সরদার। এমনকি তার হেফাজতে থাকা মালিকের প্রাইভেট কারটি নিয়ে চম্পট দিয়েছেন। যা কমপেক্ষ ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। প্রতারক সবুজের  মালিক প্রবাসীর মামা একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগ করলে প্রাইভেটকার এর কাগজপত্র ও তার নিকট থাকা ১০ লক্ষাধিক টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিলেও তা দেননি প্রতারক সবুজ সরদার। এমনকি গত এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ হতে ফোন বন্ধ করে দিয়েছেন প্রতারক সবুজ সরদার। বাধ্য হয়ে তার প্রবাসীর মামা মামলা দিয়েছেন প্রতারক সবজু সরদারের নামে।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারনা করে সে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে তার প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছে। এও জানা গেছে সে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ধনাঢ্য লোক টার্গেট করে তার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে আস্থা অর্জন করে এবং কিছু দিন পর শুরু তার প্রতারণা নানা কৌশল। এরপর ওই ব্যক্তির সর্বস্ব লুট করে কেটে পড়ার অভিযোগও রয়েছে। প্রথম প্রথম কিছু দিন ক্ষতিগ্রস্থরা তার পিছনে দৌড়াদৌড়ি করে। তারপর এক সময় ক্ষতিগ্রস্থরা নিরুপয় হয়ে থেমে যায়। এভাবে সে পার পেয়ে আসছে। 

জনাগেছে, এলাকায় বিভিন্ন লোজনকে চাকুরী দেয়া, বিদেশ পাঠানো ও নানাবিধ প্রলোভন দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এই সবুজ সরদারের নামে। 

এদিকে এলাকায় গুঞ্জণ রয়েছে সে দীর্ঘকাল ধরে প্রতারণা ও মাদকা ব্যবসায় জড়িত থেকে সে কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। 

আরও জানাগেছে, অভয়নগর এলাকার মাদকাসক্ত সন্ত্রাসী চক্রের সাথে তার গভীর সখ্যতার অভিযোগ রয়েছে। একই সাথে এলাকার কয়েকজন চিহৃিত বিতর্কিত নেতার সাথেও তার সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে তার নিকট হতে আর্থিক সুবিধা নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতারক সবুজ সরদারকে গ্রেফতার পূর্বক তার বিরূদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।