• 14 Jun, 2025

তামাক নিয়ন্ত্রণে নড়াইলে প্রশিক্ষণ: টার্গেটে তরুণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

তামাক নিয়ন্ত্রণে নড়াইলে প্রশিক্ষণ: টার্গেটে তরুণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নড়াইলে অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মশালা। তামাকবিরোধী পদক্ষেপ কার্যকর করতে অংশগ্রহণকারীরা দেন বহুমাত্রিক প্রস্তাব—শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় বিক্রয় নিষিদ্ধ, মোবাইল কোর্ট জোরদারকরণ এবং সিএসআর-সতর্কতা সহ নানা বাস্তবভিত্তিক সুপারিশ উঠে আসে আলোচনায়।

নড়াইল জেলায় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ ও সংশোধনী ২০১৩ এর কার্যকর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। বুধবার, ৪ জুন ২০২৫ তারিখে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তার জাহান।

প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল আইনটির যথাযথ প্রয়োগ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং একটি সমন্বিত তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আশরাফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকন বিশ্বাস এবং স্থানীয় সরকার উপপরিচালক জুলিয়া সুকায়না।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এম এম আরাফাত হোসেন। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব রবিউল আলম প্রশিক্ষণে গবেষণা ও নীতিগত দিক তুলে ধরেন।

প্রশিক্ষণে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা, গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন।

গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসমূহ:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার আহ্বান।

স্থানীয় সরকার বিভাগের গাইডলাইন অনুযায়ী বিক্রেতাদের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব, যাতে নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

তামাক কোম্পানিগুলোর সিএসআর কার্যক্রমে সতর্কতা এবং FCTC-এর ৫.৩ ধারা অনুসরণে প্রশাসনের সক্রিয়তা বৃদ্ধি।

মোবাইল কোর্ট ও নিয়মিত টাস্কফোর্স সভার মাধ্যমে তদারকি জোরদার করার সুপারিশ।

সকল পাবলিক প্লেস ও পরিবহন ধূমপানমুক্ত রাখার জন্য জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি জোরদার করার আহ্বান।

পয়েন্ট অব সেল (POS) থেকে তামাকজাত দ্রব্যের সকল ধরনের বিজ্ঞাপন অপসারণ।

ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন হলে আইন সংশোধনের প্রস্তাব।

ধর্মীয় অনুশাসনের মাধ্যমে প্রচার—জুমার খুতবায় তামাক ও মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরা।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, নড়াইলকে তামাকমুক্ত জেলার রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রশাসনিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

কর্মশালার সমাপনী পর্বে সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণা করা হয়, জেলার প্রতিটি স্তরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে সক্রিয় রাখা হবে।