সড়কে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক দুই শ্রমিককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।মুক্তির পরপরই অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন।
প্রায় ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সচল হয়েছে নড়াইলের পরিবহন।
শুক্রবার(২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার পর সড়কে কোনো ধরনের অর্থ আদায় করা হবে না মর্মে পুলিশ সুপারের কাছে মুচলেকা দিয়ে মুক্তি মেলে খোকন বিশ্বাস ও সাকিবের।
এ বিষয়ে নড়াইল আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন আলম বলেন, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. দোলন মিয়ার নেতৃত্বাধীনএকটি দলের সঙ্গে আঞ্চলিক শ্রমিক ফেডারেশনের(যশোর) সভাপতি মিঠু মোল্যা, নড়াইল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো, আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহিরুল হকের সঙ্গে রাতে বৈঠকে করি।সেখানে পুলিশের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আমরা অঙ্গীকার করি রাস্তায় দাঁড়িয়ে শ্রমিক কল্যাণের টাকা উত্তোলন করা হবে না। মালিক সমিতির নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে শ্রমিক কল্যাণের টাকা তোলা হবে।এই শর্তে আটক শ্রমিকদের মুক্ত দেয় পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারকরা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মে দূরপাল্লার পরিবহন ও আন্তঃজেলা রুটের বাস চলাচল করবে।
জেলা পুলিশ সুপার(এসপি) সাদিরা খাতুন বলেন, আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অঙ্গীকার করেছেন শ্রমিক কল্যাণের নামে তারা রাস্তায় গাড়ির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে টাকা আদায় করবে না।এই শর্তে আটক শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সড়কে প্রতি বাস থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগে বৃহস্পতিবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে শ্রমিক ইউনিয়নের কার্ডধারী খোকন বিশ্বাস ও সাকিব নামে দুই শ্রমিককে জেলা গোয়েন্দা(ডিবি) পুলিশের একটি দল আটক করে।পরে তাদের মুক্ত করতে রাতেই বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বেশ কয়েক দফায় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের ছাড়েনি।পরে দুই শ্রমিকের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার(২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় নড়াইল আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।সকাল থেকে আন্তঃজেলাসহ দূর পাল্লার কোনো পরিবহন নড়াইল থেকে ছেড়ে যায়নি এবং অন্য জেলা থেকে কোনো বাস নড়াইলে প্রবেশ করেনি।ফলে দূরপাল্লার যাত্রীদের পাশাপশি, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, মাগুরাসহ নড়াইলের আশপাশের গন্তব্যে বের হওয়া যাত্রীরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে।বাড়তি ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যেতে হয় যাত্রীদের।