নড়াইলকণ্ঠ ॥ আড়াই হাজার টাকার ভাউচারে স্বাক্ষর করে একহাজার টাকা বেতন পাওয়া সেই আয়াকে চাকুরীচ্যুতির কথা বলেছেন জেলা বিআরডিবি উপপরিচালক সুজিত কুমার বিশ্বাস।
মঙ্গলবার(২৭ আগষ্ট) সকালে আয়া মুর্শিদা কে ডেকে তার সামনেই স্বাক্ষর করা ভাউচার ছিড়ে ফেলেন তিনি। এরপর তাকে সামনের মাস থেকে কাজে আসতে নিষেধ করে দেন। আয়া মুর্শিদা এখন চাকুরী ফেরতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। আয়ার বেতনে ভাগ বসাচ্ছেন উপ-পরিচালক এ বিষয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরই এই ধরনের প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন জেলা বি আর ডিবি উপপরিচালক সুজিত কুমার বিশ্বাস।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নড়াইলের বি আর ডিবি উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে রাজস্ব পদে কাজ করেন ৩ জন। প্রকল্পের ২ জন। এছাড়া মাষ্টাররোলে কাজ করেন এক ঝাড়–দার। ঘরঝাড়–,ঘরমোঝা থেকে শুরু করে সব কাজই তার।এর বিনিময়ে বেতন পান মাত্র এক হাজার টাকা। এভাবেই দীর্ঘদন ধরে চলছে নড়াইলের পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর নড়াইল উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে।
২০২০ সালে নড়াইলে যোগদানের পরপরই এই অফিসে আয়ার নামে বেতন হয় আড়াই হাজার টাকা,বেতনের সীটে এবং চেকে একই পরিমান টাকা উল্লেখ করা হলেও আয়া বেতন হাতে পান মাত্র এক হাজার টাকা। অফিসের এহেন জালিয়াতি টের পেয়ে কাজ ছেড়েছেন চায়না নামের এক আয়া।
চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে চাকুরীতে যোগ দেন মুর্শিদা নামের সদরের আউড়িযার একজন গৃহকর্মী। প্রাথমিক কথায় একহাজার টাকার কথা বলে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। মাস শেষে বেতনের কাগজে সই করতে গিয়ে দেখেন সেখানে লেখা আছে আড়াই হাজার টাকা।
বিআরডিবি অফিস সুত্রে জানা গেছে,ভাউচার ছাড়াই অফিসের রেজিষ্টার এমনকি চেকে ও আড়াইহাজারের হিসাব রয়েছে।
চাকুরী হারিয়ে মুর্শিদা (০১৬০৮১৫৬৮৯৭) কাদতে কাদতে বলেন,আমার পুরো বেতন না দিয়ে স্যার আমার বেতনের কাগজ ছিড়ে ফেললেন আর আমার চাকুরী বাতিল করে দিলেন,আমি গরীব মানুষ এই টাকা দিয়ে আমি সংসারে সহায়তা করি। তাও বন্ধ হয়ে গেল? আমি এর বিচার চাই।
অফিসের পিয়নের বিশ্রামের জন্য শোবার একটি মূল্যবান খাটও ছিলো,সেটাও নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছেন উপ-পরিচালক সুজিত,জানালেন অফিসের এক কর্মচারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই অফিসের একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন,এটা উপ-পরিচালকের এখতিয়ার। কিন্তু আরো অনেক খাত থাকা সত্ত্বেও গরীব মানুষের এই টাকা খাওয়াটা কেউ সমর্থন করে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক সুজিত কুমার বিশ্বাস (০১৭১৬৩২৭২২৫) বলেন, ভাউচার ছিড়ে ফেলেছি কারন আমরা এই বিলটি অন্যভাবে ম্যানেজ করবো। ব্যাংক হিসাবসহ আরো ডকুমেন্টের স্বাক্ষরের কথা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন। আপনার অফিসে কনটেজেন্সি বিল হয় না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওটা আমরা তুলি না।