নড়াইলে দুর্বৃত্তের হামলায় আকবর হোসেন লিপন (৪৫) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন।এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশ গুরুতর জখম হয় এবং তার ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
রোববার(১১ ডিসেম্বর) রাতে লোহাগড়া উপজেলার মঙ্গলহাটা গ্রামের উত্তর পাড়া শিকদার বাড়ি মসজিদের পাশে এ ঘটনা ঘটে। আহত আকবর হোসেন লিপন একই উপজেলার মঙ্গলহাটা গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে।তিনি মল্লিকপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ছিলেন।গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারে মল্লিকপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের (মোস্ত শিকদার) সমর্থিত লোকজনের সঙ্গে লিপন মেম্বারের বিরোধ চলছিল।একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও ইউপি নির্বাচনে লিপন মেম্বার, মোস্তফা কামালের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে চেয়ারম্যান পদেনির্বাচন করেন। দুজনে পরাজিত হলেও লিপন মেম্বার মোস্তফার চেয়ে বেশি ভোট পান।তখন থেকে বিরোধ আরও জোরালো হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার রাতে মঙ্গলহাটা গ্রামের মধ্যপাড়া থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে লিপন মেম্বারকে গুরুতর আহত করেন।এতে ঘটনাস্থলে তার কব্জি ও কনুইের মাঝ থেকে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক খালিদ সাইফুল্লাহ বেলাল বলেন, লিপনের ডান হাত শরীর থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
লিপনের মা স্বরুপজান বলেন, আমার ছেলে কি এমন অন্যায় করছিল যে, তার হাত-পা কেটে ফেলতে হবে? নির্বাচনের সময় থেকে আমার ছেলেরে মারার জন্য তারা ঘুরতেছে।সুযোগ বুঝে তারা কাজটা করেই ছাড়লো।
এসময় মোস্ত শিকদার, রেজাউল শিকদার, জিয়াউর শিকদার, শাহাজাদা, আকবর মোল্যা, বিল্লাল শেখ, সেলিম শেখমিলে তার ছেলেকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমের বিচ্ছিন্ন হাতটি উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- গ্রাম্য আধিপত্যের জেরে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।তবে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচন করা যাবে।
পুলিশ সুপার সাদিরা বেগম বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।