• 03 Dec, 2024

নড়াইলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্যের জের ধরে বাড়ী দোকান মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় আটক-৫

নড়াইলে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্যের জের ধরে বাড়ী দোকান মন্দির ভাংচুরের ঘটনায় আটক-৫

নড়াইলের লোহাগড়ায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি, দোকান ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

   ঘটনায়   লোহাগড়া   থানার   উপপরিদর্শক ( এসআই মাকফুর   রহমান   বাদী   হয়ে   অজ্ঞাতনামা   ২০০   থেকে   ২৫০   জনকে   আসামি   করে   রোববার ( ১৭   জুলাই সকালে   মামলা   করেন।  বিষয়টি     নিশ্চিত   করেছেন   লোহাগড়া   থানার   ভারপ্রাপ্ত   কর্মকর্তা ( ওসি আবু   হেনা   মিলন। 

আটক   ব্যক্তিরা   হলেন   লোহাগড়া   উপজেলার   তালবাড়িয়া   গ্রামের   মৃত   আমিন   উদ্দিন   শেখের   ছেলে   মো সাঈদ   শেখ ( ৫৫ ),  দিঘলিয়া   গ্রামের   মৃত   ইসহাক   মৃধার   ছেলে   মো রাসেল   মৃধা ( ৩৮ ),  লুটিয়া   গ্রামের   মৃত   আজিজুল   গাজীর   ছেলে   কবির   গাজী ( ৪০ ),  বাটিকাবাড়ি   গ্রামের   আব্দুল   বারিক   শেখের   ছেলে   রেজাউল   শেখ ( ৪০    বয়রা   গ্রামের   সাদেকুর   রহমান   মোল্যার   ছেলে   মাসুম   বিল্লাহ ( ৩০ )  

নড়াইল   জেলা   পুলিশ   সুপার   প্রবীর   কুমার   রায়     বলেন    ঘটনায়   পুলিশসহ   সরকারি   বিভিন্ন   গোয়েন্দা   সংস্থা   মাঠে   কাজ   করছে।   আমাদের   সবার   সমন্বিত   তথ্য - উপাত্ত   ভিডিও   ফুটেজ   দেখে   দোষী   ব্যক্তিদের   আইনের   আওতায়   আনা   হবে।তবে   নিরীহ   এলাকাবাসীর   জীবনে   কোনো   ধরনের   প্রভাব   পড়বে   না।গত   রাতে   অভিযান   চালিয়ে   পাঁচজনকে   আটক   করে   আদালতে   পাঠানো   হয়েছে।প্রকৃত   দোষীদের   ধরতে   অভিযান   অব্যাহত   আছে। 

প্রসঙ্গত গত   শুক্রবার   বিকেলে   সামাজিক   যোগাযোগমাধ্যম   ফেসবুকে   দেওয়া   একটি   পোস্টে   ধর্মীয়   অনুভূতিতে   আঘাত   দিয়ে   বিতর্কিত   মন্তব্য   করার   অভিযোগ   ওঠে   আকাশ   সাহের   বিরুদ্ধে।এ   ঘটনার   জেরে   দিঘলিয়া   বাজারে   হিন্দুদের   ছয়টি   দোকান   ভাঙচুর   করা   হয়।একটি   মন্দিরে   আগুন   দেওয়াসহ   তিনটি   মন্দির   ভাঙচুর   করা   হয়।এ   ছাড়া   সাহাপাড়ার   হিন্দুদের   পাঁচটি   বসতবাড়ি      আসবাব   ভাঙচুর   করে   টাকা      স্বর্ণালংকার   লুট   করে   নিয়ে   যায়।

ধর্মীয়   অনুভূতিতে   আঘাত   করে   দাঙ্গা   সংঘটনের   অভিযোগ   এনে   সালাহ   উদ্দিন   কচি   নামের   এক   ব্যক্তি   বাদী   হয়ে   লোহাগড়া   থানায়   আকাশ   সাহাকে   অভিযুক্ত   করে   শনিবার ( ১৬   জুলাই রাতে   মামলা   করেন।শনিবার   রাত   সাড়ে   ১১টায়   খুলনা   থেকে   আকাশকে   আটক   করা   হয়।রোববার ( ১৭   জুলাই তার   তিন   দিনের   রিমান্ড   মঞ্জুর   করেন   আদালত। 

এদিকে   শনিবার   ক্ষতিগ্রস্ত   হিন্দু   সম্প্রদায়ের   বাড়ি      মন্দির   পরিদর্শন   করেছেন   নড়াইল -    আসনের   সংসদ   সদস্য   মাশরাফি   বিন   মুর্তজা।      সময়   তিনি   ভুক্তভোগী   পরিবারগুলোর   প্রতি   সমবেদনা   জানান      আর্থিক   সহায়তা   প্রদান   করেন।একই   সঙ্গে   তালিকা   করে   ক্ষয়ক্ষতির   পরিমাণ      পরিবারের   সঠিক   সংখ্যা   জানাতে   স্থানীয়   চেয়ারম্যানকে   নির্দেশ   দেন   তিনি।পাশাপাশি   দোষীদের   শাস্তি   নিশ্চিতে      ক্ষতিপূরণ   প্রদানে   ভুক্তভোগী   পরিবারের   প্রতি   আশ্বাস   প্রদান   করেন      সংসদ   সদস্য।

তিনি   বলেন উদ্ভূত   পরিস্থিতি   নিয়ন্ত্রণে   পুলিশ   প্রশাসন   সর্বদা   সচেষ্ট   ছিল।অতিরিক্ত   পুলিশ ডিবি র‌্যাব নির্বাহী   ম্যাজিস্ট্রেট   মাঠে   কাজ   করেছে।পুলিশ   প্রশাসনের   পাশাপাশি   আইন   প্রয়োগকারী   সংস্থার   সব   ইউনিট   পরিস্থিতি   নিয়ন্ত্রণের   চেষ্টা   করেছে।ভুক্তভোগীদের   ক্ষতি   যা   হয়েছে তা   সমাধান   করা   গেলেই   সমাধান   হবে   না এই   পরিস্থিতিতে   তাদের   মানসিক   ক্ষতিটা   কাটিয়ে   উঠতে   একটু   সময়   লাগবে।মানসিকভাবে   ভীতি   কাটিয়ে   ওঠার   জন্য   আমরা   তাদের   আশ্বস্ত   করছি      চেষ্টা   করছি যাতে   দ্রুত   তারা   স্বাভাবিক   জীবন   যাপন   করতে   পারে। 

মাশরাফি   আরও   বলেন এখানে   আপনারা   যারা   বসবাস   করছিলেন এটুকু   নিশ্চিত   থাকেন   আপনার   স্বাভাবিকভাবে   বসবাস   করতে   পারবেন।   এখানে   আইন   প্রয়োগকারী   সংস্থার   পাশাপাশি   দলীয়   নেতা - কর্মীরা   আছেন।ইনশা   আল্লাহ আপনাদের   কোনো   সমস্যা   হবে   না। 

এদিকে   রোববার   বিকেলে   গণস্বাস্থ্য   কেন্দ্রের   প্রতিষ্ঠাতা      ট্রাস্টি   ডা জাফরুল্লাহ   চৌধুরী   ঘটনাস্থল   পরিদর্শন   করে   ক্ষতিগ্রস্তদের   সান্ত্বনা   দিয়েছেন।এ   সময়   আগুনে   পুড়ে   যাওয়া   গোবিন্দ   সাহার   পরিবারকে   পাঁচ   হাজার   টাকা   সহায়তা   দেন   তিনি। 

ডা জাফরুল্লাহ   বলেন আমরা   সবাই   একসঙ্গে   বসবাস   করতে   চাই।   এই   দেশ   প্রত্যেকের।এ   ধরনের   হামলা   উচিত   নয়।নির্দিষ্ট   একজনের   দোষের   জন্য   সবার   ওপর   হামলা   হওয়া   উচিত   না বারবার      ধরনের   ঘটনা   ঘটায়   সংখ্যলঘুরা   উদ্বিগ্ন      আতঙ্কগ্রস্ত।   উগ্র   সাম্প্রদায়িক   হামলা - মামলা   বন্ধে   সরকারকে   আরও   উদ্যোগী   হতে   হবে।   আমরা   আপনাদের   পাশে   থাকব।   আপনারা   আমাদের   ভাইবোন। 

   সময়   তার   সঙ্গে   ছিলেন   গণসংহতি   আন্দোলনের   প্রধান   সমন্বয়কারী   জোনায়েদ   সাকি বাংলাদেশ   জাতীয়   হিন্দু   মহাজোট   কেন্দ্রীয়   কার্যনির্বাহী   কমিটির   সাধারণ   সম্পাদক   ডা এম   কে   রায়ের   নেতৃত্বে   একটি   দল   এবং   মাইনরিটি   রাইটস   ফোরাম   বাংলাদেশের   যুগ্ম   সাধারণ   সম্পাদক   পবিত্র   মিস্ত্রীসহ   কেন্দ্রীয়      জেলার   রাজনীতিকসহ   বিশিষ্টজনরা   ঘটনাস্থলপরিদর্শন   করেছেন।