নড়াইল : নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের দেবভোগ গ্রামের সালাম ও জামাল শেখের বসতবাড়ি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ফলে শিশু ও নারী সদস্যদের নিয়ে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে রয়েছে ওই পরিবার দুটির সদস্যরা।
রোববার ( ৮ জানুয়ারি ) গভীর রাতে দেবভোগ গ্রামের সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা যায় , প্রায় তিন বছর আগে দেবভোগ গ্রামের রাধাবল্লভ বিশ্বাসসহ তার তিন ভাইয়ের কাছ থেকে এক একর ২৬ শতক জমি কেনেন তারা। ( ৮৭ নম্বর দেবভোগ মৌজার আর . এস খতিয়ান নম্বর - ১২৪৩ , আরএস ২৮৭৪ ও ২৮৭৫ দাগের ৯৬ শতক জমি এবংআর . এস খতিয়ান ৮১১ , দাগ নম্বর - ২৮৯০ এর ২৪ শতক এবং অন্য আরেকটি দাগে ৬ শতক ) ।নিয়মানুযায়ী জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামপত্তন সম্পন্ন করেছেন তারা।গত তিন মাস ধরে ওই জমিতে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন ওই দুই ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা।
ক্ষতিগ্রস্ত দুই ভাই সালাম ও জামাল শেখ জানান , হঠাৎ করে রোববার রাতে রাধাবল্লভের ভাতিজা সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে ১০ - ১৫ জন লোক তাদের একটি বসতঘর , রান্নাঘর ও বাথরুম ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন। ফলে কনকনে শীতের মধ্যে সালাম ও জামাল শেখের পরিবারের ১৫ জন সদস্য খোলা আকাশের নীচে রাত কাটানোসহ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভুক্তভোগীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সোমবার ( ৯ জানুয়ারি ) সকালে নড়াইল সদর থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এ ঘটনার প্রায় ছয় মাস আগে সালাম ও জামালের পরিবারের সদস্যরা জমিতে গেলে জমি দাতারা হামলা চালিয়ে চার নারীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলায় আহত হন মোমেনা বেগমসহ ( ৪৫ ) তার তিন পুত্রবধূ মমতাজ বেগম ( ২৫ ), ইতি বেগম ( ১৮ ) ও আছমা বেগম ( ২২ ) ।পরে স্থানীয়ভাবে একটা মীমাংসা হলে তারা তিন মাস আগে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে সুফল বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন , সালাম ও জামাল শেখের বাড়িতে আমার নেতৃত্বে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। কে বা কারা হামলা করেছে জানি না। আমি যশোরে আছি। এ জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় আদালতে মামলা চলছে।
তবে ক্ষতিগ্রস্ত সালাম শেখের ছেলে ইমন বলেন , সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকেরা যাওয়ার প্রায় ২০ মিনিট আগেও সুফল বিশ্বাস লাঠি উঁচিয়ে ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় সুফল বিশ্বাস কোথায় অবস্থান করছিলেন ; তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা জানতে পারবে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মাহমুদুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন , বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।