নিহত কিশোর হাসিব (১৩) পাথরঘাটার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথরঘাটা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড পাথরঘাটার বাদুরতলা গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান ওরফে শিশু ফকির (১৯) কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য।
অন্যান্য ৬ জন হলেন, নোমানের সুমন্ধী রহিম মুন্সি, শ্বশুর ইউনুস (৬৫), ফুফাত ভাই সৈয়দ আলী মাঝির ছেলে মো. জসিম (৩০), ইউনুসের মেয়ে তানজিলা (২৩), নোমানের স্ত্রী তাহিরা (১৯), নোমানের শাশুড়ি রহিমা (৫৫) এবং ইজিবাইক চালক আব্দুর রহিম কাজী (৪৫)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ অক্টোবর সকালে পূজা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসিবকে অপহরণ করা হয়। এরপর অপহরণকারীরা টাকা চেয়ে পরিবারের কাছে নির্যাতনের একটি ভিডিও বার্তা পাঠায়। তারা হাসিবের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে পরিবারের কাছে মুক্তিপণের তিন লাখ টাকা চেয়ে বারবার ফোন করতে থাকে। এ ঘটনায় হাসিবের বাবা শফিকুল ইসলাম পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর থেকেই অভিযানে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা যায় অপহরণকারীরা বারবার স্থান পরিবর্তন করছে, যার কারণে তাদের খুঁজে পেতে বিলম্ব হয়। পরে বিষখালী নদী সংলগ্ন কাকচিড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বাইনচটকি স্লুইজ এলাকা থেকে ড্রামের ভেতরে অর্ধগলিত মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।
এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল নোমান কিলিং মিশনের বর্ননা দিয়ে জানান, প্রথমে হাসিবকে কৌশলে নোমানের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় তারা। ওই কিশোরকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রাতে ঘুমিয়ে রাখা হয়। পরদিন শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে হাসিবের হাত, পা, মুখ বেঁধে ভিডিও করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেয়ে তাকে গলায় রশি দিয়ে হত্যা করে। পরে রোববার সকালে মৃত অবস্থায় আসামি নোমানের শ্বশুরবাড়ি নিয়ে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। সন্ধ্যায় আসামি নোমানের সুমন্দি আব্দুর রহিম মুন্সির সহযোগিতায় ইজিবাইক চালক আব্দুর রহিম কাজির গাড়িতে করে দক্ষিণ বানচটকি মজিদ খানের বাড়ির সামনের রাস্তায় গর্তে করে পুঁতে রাখে। পরে আসামির দেখানো মতে হাসিবের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম হাওলাদার বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা এবং অন্য কোনো রহস্য আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।