• 07 May, 2024

মনের অজান্তেই শিশুর পেটে যাচ্ছে কাপড়ের কেমিক্যাল

মনের অজান্তেই শিশুর পেটে যাচ্ছে কাপড়ের কেমিক্যাল

কাপড়ের ডিজাইনে ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক উপাদান। ওই কাপড় ব্যবহার করছেন অনেক মা। শিশুরা মায়ের কোলে বসে মনের অজান্তে কাপড় কামড়ালে শিশুর পেটে কেমিক্যাল প্রবেশ করে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই পরিবেশ দূষণ রোধ এবং স্বাস্থ্যবান্ধব পোশাকের জন্য ‘ন্যাচারাল ডাইং’ বা কাপড়ে শতভাগ প্রাকৃতিক রং ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এসএমই ফাউন্ডেশন এক বার্তায় এ তথ্য জানায়।

সংস্থাটি জানায়, ফেব্রিক্স বা কাপড় ডাইং করতে সম্পূর্ণ প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত উপাদান, যেমন- উদ্ভিদ, প্রাণী, পোকামাকড় এবং খনিজ উৎস ব্যবহার করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ন্যাচারাল ডাইং। সিন্থেটিক ডাইং থেকে প্রাপ্ত রাসায়নিক উপাদান পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই পরিবেশ দূষণ রোধ এবং স্বাস্থ্যবান্ধব পোশাকের জন্য ন্যাচারাল ডাইংয়ের বিকল্প নেই। কারণ, লোহার মরিচা কাপড়ের ডিজাইনে ব্যবহার করা হলে শিশুরা মায়ের কোলে বসে মনের অজান্তে কাপড় কামড়ালে শিশুর পেটে কেমিক্যাল প্রবেশ করে। অথচ কাপড়ে কোনো ভেষজ বা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হলে তা কারো জন্যই ক্ষতিকর নয়।

এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ভেষজ পদ্ধতিতে ওষধি গাছের বাইরে থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় নির্জাস বের করে বাটিক প্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট ,হ্যান্ড পেইন্টসহ বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে কাপড় প্রিন্ট করা হয়। তার সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে হরিতকী। হরিতকীতে রয়েছে বিশেষ গুণ যা কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়বিক দুর্বলতা, হাঁপানি, অ্যালার্জি, অধিক ওজনের চিকিৎসাসহ ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি কালো মাটি দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে শতভাগ পরিবেশবান্ধব কাপড় প্রিন্ট করা যায়। যেমন- শাড়ি, থ্রি-পিস, ওয়ান পিস, কুশন কাভার, স্যান্ডেল, বিছানার চাদর, ব্যাগ, ইত্যাদি। অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রায় সব ফ্যাশন হাউজের পণ্য একই ধরনের। আর ক্রেতারা চান ভিন্নতা, ব্যতিক্রমী ডিজাইন ও পরিবর্তন। তাই তারা ঝুঁকছেন ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে আসা এবং তুলনামূলক সস্তা পোশাকের দিকে। এসব বিষয় বিবেচনা করে এসএমই ফাউন্ডেশন ‘ন্যাচারাল ডাইং’ প্রশিক্ষণ আয়োজন করে।

চলতি বছরের ১৭-২১ সেপ্টেম্বর এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রশিক্ষণে ঢাকা, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, বগুড়া, নওগাঁ, ঝিনাইদহের ৩০জন উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। শতভাগ কেমিক্যালমুক্ত প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান খয়ের, ডালিমের খোসা, পেঁয়াজ পাতা, বিট, হরিতকী, পান, খাবার হলুদ, বিভিন্ন প্রকার মাটি, চুন, খাবার গুড়, গরুর দুধ, ময়দা বাবলার আঠাসহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে সরাসরি দিয়ে কাপড় ডাই করার পদ্ধতি শেখানো হয় প্রশিক্ষণে। প্রশিক্ষণ শেষে সিল্ক স্কার্ফ ও সুতি কাপড়ের ওপর ভিন্ন ধরনের উপাদান দিয়ে ন্যাচারাল ডাইং করে প্রোডাক্ট তৈরি করবেন উদ্যোক্তারা।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট, নাটোর, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫টি ‘ন্যাচারাল ডাইং’ প্রশিক্ষণে ১৩৯জন উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন, যাদের ৯০ শতাংশের বেশি নারী উদ্যোক্তা।