• 18 May, 2024

কখনোই পরাজিত শক্তির হাতে দেশ তুলে দেব না

কখনোই পরাজিত শক্তির হাতে দেশ তুলে দেব না

যারা অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইন তুলে ফেলে মানুষ হত্যা করে, তারা একাত্তরের পরাজিত শক্তির দালাল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কখনোই পরাজিত শক্তির হাতে দেশ তুলে দেব না।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা এ দেশে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসংযোগ করে, রেললাইনের ফিশপ্লেট তুলে ফেলে, তারা তো পরাজিত শক্তির দালাল, পরাজিত শক্তির দোসর।

কাজেই এদেরকে না বলুন। এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করারই কোনো অধিকার নেই। খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী, দুর্নীতিবাজ এদের বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশের মানুষ তাদের অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে।তারা সেই ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে। তারা শান্তিতে বাস করবে। উন্নত জীবন পাবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে চলবে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে, শহীদদের কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষ সেবা পায়। এখন তো মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিটি মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আজ বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।

আর এই সম্মান দিতে পারে না আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন ওই হানাদার বাহিনীর দোসর যারা ছিল এরাই তাদের প্রেতাত্মা হয়ে মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে মানুষ হত্যা করে যাচ্ছে। আরো মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করছে।

 

সরকারপ্রধান বলেন, এখানে আমার একটা আবেদন থাকবে, প্রতিটি এলাকায় যেখানে রেললাইন আছে, যানবাহন চলাচল করছে সেখানে যখন কোনো ঘটনা ঘটাবে, সঙ্গে সঙ্গে জনগণ যদি মাঠে নামে এরা হালে পানি পাবে না। কাজেই আমি জনগণের কাছে আহ্বান জানাব সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। কারণ এরা শুধু ধ্বংস করতে জানে, এরা কোনো কিছু সৃষ্টি করতে জানে না। এরা শুধু মানুষ খুন করতে পারে, মানুষের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারে না। এরা মানুষের সর্বনাশ করতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনটাকে উন্নত করতে পারে না।

তিনি বলেন, আর কোথাও এ ধরনের রেলের ফিশপ্লেট তুলে ফেলা বা রেললাইন তুলে ফেলা, আগুন দেওয়া, যখনই যে করতে যাবে সরাসরি তাদের ধরতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। রেলে চড়ে মানুষ যাবে, সেখানে রেললাইন তুলে ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যা করবে, তারা আবার কথা বলে কোন মুখে? হত্যাকারীরা কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না। এটা দেশের মানুষকে বুঝতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমরা আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবীকে হারিয়েছি, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি, তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি। আর শহীদের রক্ত কোনো দিন বৃথা যায় না, বৃথা যায়নি। আজকের বাংলাদেশ এই ১৫ বছরে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি এবং সেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে জ্বালাও-পোড়াও ও প্রাণহানির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষ মারার রাজনীতি করে, মানুষ মারার পরিকল্পনা করে তারা দেশের মানুষকে কোন গণতন্ত্র দেবে? তিনি বলেন, বিএনপি মানুষ মারার রাজনীতি করে বলেই জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সহসভাপতি যথাক্রমে শেখ বজলুর রহমান ও নুরুল আলম রুহুল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী ফয়জুর রহমান আহমেদের ছেলে ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলিম চৌধুরীর মেয়ে অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা শেখ মুজিব আমার পিতা গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করেন।