এদিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে যাত্রীদের বাড়তি কোনো চাপ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঘাট কর্তৃপক্ষ। ঈদে ঘরমুখী মানুষজন নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে নৌপথ পারাপারে ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। বৈরী আবহাওয়া না থাকলে এবারের ঈদযাত্রায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, পাটুরিয়া ফেরিঘাট হয়ে ভোগান্তি ছাড়াই গ্রামের বাড়ি ফিরতে পারবেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষজন।
শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, জাগীর পুলিশ ক্যাম্প, গোলড়াসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে মহাসড়কের পাটুরিয়া ফেরিঘাটমুখী যানবাহনের তেমন চাপ নেই। কিছুক্ষণ পর পর দূরপাল্লার বাস স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে। ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত চলাচল করা সেলফি পরিবহনে যাত্রীর চাম কম ছিল। বাসস্ট্যান্ড এলাকার সদর উপজেলা পরিষদের সামনে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ওই স্থানে সড়ক পারাপারের সময় সরাসরি লেনে আসা যানবাহনকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। মহাসড়কে পাটুরিয়াগামী যানবাহনের চাপ বেড়ে গেলে ওই স্থানে যানজটের আশঙ্কা করছে বাস চালকরা।
সেলফি বাসের পাটুরিয়াগামী যাত্রী রায়হান খান বলেন, ঈদের দু-একদিন আগে গ্রামের বাড়িতে যেতে অনেক সমস্যা আর ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এজন্য পরিবার নিয়ে এখনই গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গায় যাচ্ছি। পরিবার নিয়ে সড়ক পথে বা ফেরিঘাট এলাকায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা খুবই কষ্টের। এজন্য ভোগান্তি এড়াতে আগেই গ্রামের বাড়িতে রওনা হয়েছি।
গোল্ডেন পরিবহনের আরেক যাত্রী মিজানুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া ফেরিঘাট হয়ে প্রতিবছরই ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে যাই। অনেক ঈদযাত্রায় ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে মহাসড়ক ও ফেরিঘাট এলাকায়। কিন্তু পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে এই রুটে যানবাহনের চাপ অনেক কম।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকেন্দ বসু বলেন, ঈদে মানুষজন গ্রামের বাড়িতে যেতে শুরু করছে। তবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের অংশের যানবাহনের কোনো চাপ নেই। ঈদের দু-একদিন আগে সাভার, আশুলিয়া, নবীনগরসহ ওই অঞ্চলের পোশাক কারখানা ছুটি হলে যানবাহনের চাপ কিছুটা বাড়বে। তবে মহাসড়কে যানজটমুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশও কাজ করবে। আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রায় ঘরমুখী যাত্রীদের সড়ক পথে তেমন ভোগান্তি হবে না।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) কে এম মিরাজ বলেন, ঈদযাত্রায় ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহনের নিরাপদ যাতায়াতের ক্ষেত্রে জেলা পুলিশ সুপার আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী ট্রাফিক পুলিশ কাজ করবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশেন (বিআইডব্লিটিসি) আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য শাখার উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, গতকাল শুক্রবার (৫ এপ্রিল) ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও নৌবহরে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই পারাপার হয়েছে। আজকে সকালের দিকে কিছু যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ি ছিল, তবে ঘাটে আসা মাত্রই ফেরিতে ওঠে নদী পার হয়েছে। আজকে ১৩টি ছোট বড় ফেরির মধ্যে ১১টি ফেরি নৌপথে চলাচল করছে। ঈদযাত্রায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে আরও দুটি ফেরি আমাদের বহরে এসে যোগ দেবে। আশা করছি, ভোগান্তি ছাড়াই এবার ঘরমুখী মানুষ ও যানগুলো নৌপথ পারাপার হতে পারবে।