নড়াইলকণ্ঠ ॥ নড়াইলের চিত্রা নদীতে অনুষ্ঠিত হলো আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নৌকা বাইচকে ঘিরে চিত্রানদীর চার কিলোমিটার জুড়ে নদীর দুপাড়ে ছিলো হাজার হাজার মানুষের ভিড়। আনন্দ উচ্ছ্বাসে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেছেন নানা বয়সী মানুষ।
শনিবার(২২ অক্টোবর) নড়াইল জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নৌকাবাইচ প্রতিযোগতার আয়োজন করা হয়।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর দুপুর ২টার দিকে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়।শেখ রাসেল সেতু থেকে শুরু হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার নদীপথ অতিক্রম করে চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান সেতুতে গিয়ে শেষ হয়।
নৌকাবাইচ উপভোগ করতে অনেকেই গাছে উঠে আবার অনেকে ছাদে উঠে আবার কেউ টাইয়ার ভেলা বানিয়ে নদীতে ভেসে ভেষে উভোগ করেছেন। তবে নৌকাবাইচ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে বহিরাগত দর্শনার্থীদের ট্রলার নৌকাবাইচ এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন প্রশাসন।
এদিকে প্রতিযোগিতাকে ঘিরে সকাল থেকে নড়াইলের পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে উৎসক জনতা আসতে শুরু করে।বাস, ইজিবাইক, নছিমন, করিমন, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে দর্শকরা দুপুরের আগেই নড়াইল শহরে পৌঁছে যায়।শেখ রাসেল সেতু থেকে শিল্পী এসএম সুলতান সেতু পর্যন্ত চিত্রার দু’পাড়ে অবস্থান নেন লাখো লাখো দর্শক।
লোহাগড়া সরদার আব্দুল হাই বলেন,‘দীর্ঘদিন পর এতো মনোরম আয়োজনে নৌকাবাইচ দেখতে পেরে ভীষণ আনন্দপেয়েছি। যারা এ আয়োজন করেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।
যশোর এলাকার দর্শনার্থী সুমন বলেন, এমন আয়োজন আমি জীবনেও দেখি নাই।এতো বড় একটা আয়োজন দেখতে পেলাম। নৌকাবাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খুব উপভোগ করেছি।এ আয়োজন প্রতিবছর হোক এ আশা করি।
উন্নয়ন কর্মী মিতু খাতুন বলেন, পুরা বাইচ দেখেছি। আয়োজন ছিলো উপভোগ করার মতো।প্রতিবছরই এই নৌকা বাইচ দেখতে আসি বন্ধু-বান্ধদের নিয়ে। এ আয়োজন প্রতিবছর হোক।
প্রতিযোগিতা শেষে রূপগঞ্জ বাঁধাঘাটে বিজয়ীদের মাঝে অতিথিরা পুরষ্কার বিতরণ করেন।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লর রহমান চৌধুরী।
অন্যান্যেদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, নবনির্বাচিত নড়াইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু, পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, এসএম সুলতান নৌকাবাইচ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকুসহ নড়াইলের সম্মানিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিগণ।
এবার প্রতিযোগিতায় টালাই নৌকা-৩টি, কালাই নৌকা-০৯টি এবং নারীদের নৌকা-৩টি নৌকা মোট ১৫টি অংশগ্রহণ করে ।