নীতি সুদহার বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
নীতি সুদহার (পলিসি রেট) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন সুদের হার কার্যকর হবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
দেশের ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা রয়েছে, এমন হিসাবের (অ্যাকাউন্ট) সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। বিশেষ করে আর্থিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতি চাপের মধ্যেও বড় অঙ্কের জমার হিসাব সংখ্যা বাড়ছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী— ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি রয়েছে; এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাবের সংখ্যা এক লাখ ১৭ হাজার ছুঁইছুঁই।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পিষ্ট। সাধারণ মানুষ এখন সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে ব্যাংকে টাকা জমানোর চেয়ে অনেকে আগের জমানো অর্থ ভেঙে খাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতেও একটি শ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। এরা হচ্ছে বিত্তশালী বা বড় প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (১৩ মার্চ) সবশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৭টি। এসব হিসাবে জমা আছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে— এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি। কোটি টাকার উপরের এসব হিসাবে জমা আছে ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৪২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কোটি টাকার হিসাবধারীদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।
এদিকে গত বছরের (২০২৩) তৃতীয় প্রান্তিকে জুলাই-সেপ্টেম্বরে এক কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৬টি। ওই প্রান্তিকে এসব ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৭ লাখ ২৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩ মাসের ব্যবধানে (অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে) কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৩২২টি। একই সময়ে এসব হিসাবের বিপরীতে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১৫ হাজার ৯১২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯২ হাজার ৫১৬টি। যেখানে জমা ছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। পাঁচ কোটি ১ টাকা থেকে ১০ কোটির ১২ হাজার ৬৫২টি হিসাবে জমার পরিমাণ ৮৯ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা। এছাড়া ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকার হিসাবের সংখ্যা রয়েছে চার হাজার ৮২টি, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটির মধ্যে ২ হাজার ২টি, ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটির মধ্যে এক হাজার ৩৪৫টি, ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৯১২টি আমানতকারীর হিসাব। আর ৩০ কোটি থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৫১২টি এবং ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৪৮০টি, ৪০ কোটি থেকে ৫০ কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা ৭৩৮টি। তাছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা এক হাজার ৮১২টি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এ আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে তা দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯৭৬টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই হিসাবের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। সবশেষ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সেই হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে।
নীতি সুদহার (পলিসি রেট) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন সুদের হার কার্যকর হবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
প্রতি ভরি সোনার দাম সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫০২ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস)। দাম বাড়ানোর ফলে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম হবে এক লাখ ১৫ হাজার ৪৫০ টাকা। যা আগামীকাল বুধবার থেকে কার্যকর হবে।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও নির্মাণ সামগ্রী খাতে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচন করে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনিক সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউসিআইএল) বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নিয়ে এলো-ঢালাই স্পেশাল সিমেন্ট।