• 03 May, 2024

আরেকটি রানওয়ে হচ্ছে শাহজালালে

আরেকটি রানওয়ে হচ্ছে শাহজালালে

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাড়ছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বাড়ছে যাত্রীর চাপ। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়বে। এমনিতেই ফ্লাইটগুলোকে উড্ডয়নের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তখন চাপ আরও বাড়বে। এ সমস্যা নিরসনে আরেকটি রানওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘থার্ড টার্মিনাল চালু হলে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা অনেক বাড়বে। একটা রানওয়ে দিয়ে এত বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আরেকটি রানওয়ে তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। এটা আলাদা ফুলফেজের ইনডিপেনডেন্ট রানওয়ে হবে না, এটা হবে ডিপেনডেন্ট রানওয়ে। অর্থাৎ একটা রানওয়ে দিয়ে ফ্লাইট ওঠানামার সময় আরেকটি বন্ধ থাকবে। দুটি রানওয়ের সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এভাবে রানওয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’ জানা যায়, আগামী ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আংশিক উদ্বোধন করা হবে। তবে পুরোপুরি কার্যকর হতে আগামী বছরের মাঝামাঝি চলে যাবে। এমনিতে ফ্লাইটগুলোকে উড্ডয়নের জন্য ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এ অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হবে। সমস্যা নিরসনে বিকল্প রানওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একটি বিমানবন্দরে একাধিক রানওয়ে থাকলে একটি থেকে অপরটি নির্ধারিত দূরত্বে স্থাপন করতে হয়। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী, পাশাপাশি দুটি রানওয়ের মধ্যে অন্তত ৭৫০ ফুট দূরত্ব থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে সে পরিমাণ জায়গা না থাকায় বাড়তি ফ্লাইটের চাপ সামলাতে ডিপেনডেবল রানওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে একই সময়ে মূল রানওয়ে এবং ডিপেনডেবল রানওয়েতে উড়োজাহাজ ওঠা-নামা করার সুযোগ নেই। মূল রানওয়েতে যখন ফ্লাইট ওঠা-নামা করবে, সে সময় ডিপেনডেবল রানওয়েতে ফ্লাইট উড্ডয়নের জন্য অপেক্ষা করবে। একই সঙ্গে মূল রানওয়ে থেকে উড়োজাহাজ দ্রুত সময়ে অ্যাপ্রোনে যেতে হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়েও নির্মাণ করা হয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দরে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশি-বিদেশি ৩৩টি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। বিদ্যমান একটি রানওয়ে ব্যবহার করে প্রতিদিন গড়ে ১৫০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করছে। ৩০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে এক দিনে। ফলে প্রায় পিক আওয়ারে একই সময়ে একাধিক ফ্লাইট থাকলে টেক অফের জন্য উড়োজাহাজগুলোকে সিরিয়াল ধরে অপেক্ষা করতে হয়। অন্যদিকে ল্যান্ডিংয়ের অনুমতি না পেলে আকাশে গো অ্যারাউন্ড করতে হয়। এতে এয়ারলাইনসগুলোর জ্বালানি খরচ যেমন বাড়ে, তেমনি ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখতেও বেগ পেতে হয়। থার্ড টার্মিনাল চালুর অপেক্ষায় রয়েছে বিদেশি এক ডজন এয়ারলাইনস। ইতোমধ্যে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তারা। তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, পুরোপুরি চালু হলেই থার্ড টার্মিনালে আগামী বছরের ডিসেম্বর থেকে আগ্রহী বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোকে অনুমোদন দেওয়া হবে। ঢাকায় আসার আগ্রহ প্রকাশ করা বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো হলো- ইথিওপিয়া এয়ার,  শ্রীলঙ্কার ফিটস এয়ার, দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়ান এয়ার, আবুধাবিভিত্তিক উইজ এয়ার, ইন্দোনেশিয়ার গারুদা ইন্দোনেশিয়া, ইরাকের ইরাকি এয়ারওয়েজ, জর্দানের রয়াল জর্দানিয়ান, এয়ার ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও সৌদি আরবের রিয়াদ এয়ার। এক ডজনেরও বেশি এয়ারলাইনস আগ্রহ প্রকাশ করলেও আফ্রিকার শীর্ষ এয়ারলাইনস ইথিওপিয়া এয়ারকে ফ্লাইট চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেছেন, ‘অনেকেই চেয়েছে এ বছর থেকেই ফ্লাইট চালু করতে। কিন্তু বর্তমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যে চাপ সেখানে এতগুলো এয়ারলাইনসকে ফ্লাইট দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু ইথিওপিয়া এয়ারকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা অনেক আগে থেকেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। চলতি মাসেই ইথিওপিয়ার সঙ্গে এয়ার সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্ট করতে ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধি দল যাচ্ছে। সে চুক্তি হয়ে গেলেই তারা যে কোনো মুহূর্তে ফ্লাইট চালু করতে পারবে।’