নড়াইলে ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রদল নেতাসহ আহত ৬
নড়াইল পৌর এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার ছাত্রদল নেতাসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নড়াইল জেলা পরিষদের সম্পত্তির উপর নড়াইল পৌরসভা অবৈধ দখল করে কসাইখানা নির্মাণ কাজ চলমান রাখার প্রতিবাদে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সভাকক্ষে জেলা পরিষদের সম্পত্তি নড়াইল পৌরসভার অবৈধ দখল থেকে রক্ষার গৃহীত কার্যক্রমের জন্য এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ‘নড়াইল পৌরসভা জেলা পরিষদের সম্পত্তি অবৈধ দখল করে নির্মাণ কাজ চলমান রাখতে নেপথ্যে কতিপয় সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা সহায়তা করে যাচ্ছেন। আদালতের নিষেধজ্ঞা থাকা সত্বেও তারা থেমে নেই। ওইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সহায়তা নিয়েই রাতের অন্ধকারে নির্মাণ কাজ অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন আহবান করা।’ এ বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করলেও আমরা কোন আইনগত সহায়তা পাচ্ছি না।
এ সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস সাংবাদিকদের জানান, ‘গত ২৭ নভেম্বর (২০২৩) নড়াইল পৌরসভার মেয়রের স্বাক্ষরিত স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। ওই স্মারকলিপিতে নড়াইল পৌর মেয়র যেসব অভিযোগ আনায়ন করেছেন তাহা সঠিক নহে। উক্ত স্মারকলিপির প্রতিটি শব্দ এবং বাকা চয়ন বিজ্ঞ আদালতে প্রভাবিত করা কুরুচিপূর্ণ এবং আদালত অবমাননাকর। তিনি ওই স্মারকলিপিতে উত্থাপিত তথ্য সঠিক নয় বলে জানান।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন কুমার সাহা, পরিষদের কর্মচারীবৃন্দ এবং নড়াইল জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টোনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিতি ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, ‘আমি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, নড়াইল জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে ২০-১১-২০১১ খ্রিঃ তারিখ হতে ২৩-০১-২০১৭ খ্রিা তারিখ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন এবং বর্তমানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তাছাড়া নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘ ১৮ বছরের অধিক সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছি। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবেও ইতোপূর্বে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি কোন দিন নড়াইল জেলায় উন্নয়ন কাজে বাধাগ্রস্থ/উন্নয়ন কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করি নাই। নড়াইল জেলায় উন্নয়নে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। আমার প্রচেষ্টায় শেখ রাসেল সেতু নির্মাণের মত উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি।
তিনি বলেন, ১৯০৭ সালে নড়াইল-এর তৎকালিন জমিদার বাবু নরেন্দ্র ভূষণ রায় তার পিতা কালিদাস রায় এর নামে ৩,০০০/-(তিন হাজার) টাকায় খরিদকৃত সম্পত্তিতে ৩.৭৬৭/-(তিন হাজার সাতশত সাতঘাট) টাকা ব্যয়ে ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য, ১৬০ ফুট গ্রন্থ এবং ২৬ ফুট গভীরতা একটি পুকুর খনন করেন। পরবর্তীতে পুকুরটি কালিদাস ট্যাংক হিসেবে যশোহর ডিস্ট্রিক বোর্ডের নামে দখল স্বত্ত দেয়া হয়। ১৯২১ সালের সি এস এবং ১৯৬৩ সালের এস এ খতিয়ান অনুয়ায়ী ৭৪ নং মহিষখোলা মৌজায় ২নং খতিয়ানের ৫২৮ দাগের ২.০৫ একর সম্পত্তিতে অবস্থিত এই পুকুরটি ১৯৮৪ সালে নড়াইল জেলা প্রতিষ্ঠত হওয়ার পর জেলা পরিষদের মালিকানায় কালিদাস ট্যাংক পুকুর। অপর দিকে ৭৪ নং মহিষখোলা মৌজায় ০২ নং এস এ খতিয়ানের ৫৩৯ নং দাগে ১.০১ একর সম্পত্তিতে ভরাটকৃত যোগেন্দ্রচন্দ্র পুকুরসহ ৫১৮,৫২৯, ৫১১,৫৩১,৫৩৩ ও ৫৩৯ দাগে নড়াইল জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সর্বমোট ৪.২১ একর সম্পত্তি। নড়াইল জেলা পরিষদ কর্তৃক উক্ত সম্পত্তির বিপরীতে বাংলা ১৪৩০ সন পর্যন্ত খাজনা পরিশোধ করা হয়েছে।
নড়াইল জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ৭৪ নং মহিষখোলা মৌজার ২না এস এ খতিয়ানের ৫২৮ দাশের ২.০৫ একর সম্পত্তিতে কালিদাস ট্যাংক পুকুর, যা নড়াইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে এবং পৌরসভার পিছনে সুপেয় মিষ্টি পানির জন্য সংরক্ষিত। উক্ত সম্পত্তিতে নড়াইল পৌরসভা কর্তৃক নড়াইল জেলা পরিষদ এর অম্লাতে/অন্বাক্ষাতে তথ্য স্থানীয় সরকার বিভাগের পূর্বানুমোদন ব্যতিত জোর পূর্বক অবকাঠামো (বিউটিফিকেশন) নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বিষয়টি ০৪-০৩-২৩, ৩০-০৪-২৩, ০৩-০৫-২৩ খ্রি তারিখ ০৪,০৭ ৩৩৮ নং ডি ও পত্র প্রেরণের পর গত ২৪ আগষ্ট ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ১৯১ নং স্মারক পত্রের মাধ্যমে ২৯ আগষ্ট ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে উভয় (নড়াইল পৌরসভা ও নড়াইল জেলা পরিষদ) পক্ষকে শুনানীর জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রসহ বেলা ১১.০০ ঘটিকায় উপস্থিত থাকার জন্য নিদের্শনা প্রদান করেন। উক্ত বিষয়াদী নিয়ে শুনানীর সময় স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য জনাধ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা উপস্থিত ছিলেন। শুনানীতে কালিদাস ট্যাংক পুকুরের উপর বিউটিফিকেশন এর কাজ সম্পন্ন করতঃ নড়াইল জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করবে মর্মে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কর্তৃক মেয়র কে মৌখিক নিদের্শণা প্রদান করা হয়। উক্ত গুণানীতে আমার অনুরোধের প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কে ঘটনা স্থল সরেজমিন পরিদর্শন করার অনুরোধ করি। পরবর্তীত নড়াইল পৌরসভা স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিদর্শন টীম এর পরির্দশনের অপেক্ষা না করে মড়াইল পৌরসভা পেশী শক্তি ও জবরদস্তি করে সম্পূর্ণ বেআইনি কনট্রাকশণ নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু করেন।
পরবর্তীতে নড়াইল জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ৭৪ নং মহিষখোলা মৌজায় ০২ সং এস এ খতিয়ানের ৫৩৯ নং দাগে ১.০১ এ সম্পত্তিতে ভরাটকৃত যোগেন্দ্রচন্দ্র পুকুর। উক্ত সম্পত্তিতে নড়াইল পৌরসভা পূর্বের ধারাবাহিকতায় জেলা পরিষদের অজ্ঞাতে জোর পূর্বক অধকাঠামোয় নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বিষয়টি প্রশাসন-কে ডিও পত্রের মাধ্যমে অবহিত করার পরও পৌরসভা কর্তৃক অবৈধভাবে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ বন্ধন করা সম্ভব হয়নি।
নড়াইল জেলা পরিষদের মালিকানাধীন মহিষখোলা মৌজায় ৫২৮,৫১১, ৫২৯, ৫৩১,৫৩০ ও ৫৩৯ দাগে ৪.২১ একর সম্পত্তির উপা নড়াইল পৌরসভা কর্তৃক বে-আইন ভাবে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ জোর পূর্বক শুরু করেন। নড়াইল পৌরসভার কবল থেকে নড়াইল জেলা পরিষ এর সম্পত্তি রক্ষার্থে নড়াইল বিজ্ঞ সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ৮৮/২০২৩ নং মোকদ্দমা রুদ্ধ করা হয়। শুনানীঅন্তে ছি আদালাত নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারী করেছেন। বিজ্ঞ আদালাতের অয়ের আদেশ ইতোপূর্বে সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে
নড়াইল জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ৭৪ নং মহিষখোলা মৌজার ২নং এস এ খতিয়ানের ৫২৮ সংগের ২.০৫ একর সম্পত্তিতে কালিদান ট্যাংক পুকুর। উচ্চ পুকুরের সম্পত্তিতে পূর্বের মেয়র নতুন পৌর ভবন নির্মাণের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর ০৩-০৩-২০১৭ তারিখ আবেদন করেন। তৎকালিন পৌর মেয়র এর আবেদনের প্রেক্ষিতে নড়াইল জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সোহরাব হোসেন বিশ্বাস একক ক্ষমতাবলে স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদন ব্যতিত বে-আইনিভাবে ২৩.০৩.২০১৭ খ্রিঃ তারিখে নড়াইল পৌরসভাকে নতুন পৌর ভবন নির্মাণের জন্য লিখিত অনাপত্তি পত্র প্রদান করেন। যা জেলা পরিষদের সম্পত্তি (অর্জন, ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও হস্তান্তর) বিধি মালা ২০১৭ এর (১২) এর পরিপন্থি।
জেলা পরিষদ জেলার রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ সহ সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ যাত্মবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পৌর সভার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ান জেলা পরিষদ কখনও কোন হস্তক্ষেপ করে না। দুটি প্রতিষ্ঠানই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। জেলা পরিষদ তার নিজস্ব সম্পদ/সম্পত্তির আয়ের উপর নির্ভরশীল। জেলা পরিষদের সম্পদ/সম্পত্তিতে কোন ধরণের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করতে হলে জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার বিভাগের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বড়াইল জেলা পরিষদের সম্পত্তিতে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নে নড়াইল পৌরসভা স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদন গ্রহণ করেন নাই। যার ফলে নড়াইল জেলা পরিষদের সম্পত্তি রক্ষার্থে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত আইনগত পদেক্ষেপ জেলা পরিষদ আইনের ৪৮ ও ৫০ ধারা অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়েছে।
নড়াইল পৌর এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার ছাত্রদল নেতাসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মী ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের নামে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মকর্তাদের বদলির জন্য বিক্ষোভ মিছিলসহ জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ আসছে প্রতিদিনই। তবে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলামের বদলির আদেশ বাতিল চান বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এর দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তারা।