নড়াইলকণ্ঠ ॥ নড়াইল সদর উপজেলার ছোট মিতনা গ্রামের নিখোঁজ কিশোর ইজিভ্যান চালক মোঃ আমিনুর বিশ্বাস আলিপ (১৫) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে জেলা পুলিশ। মাত্র এক ঘন্টার অভিযানে ঘটনায় জড়িত দুই ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নড়াইল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, পিপিএম (বার)।
তিনি জানান, গত ৫ অক্টোবর আলিপের মা রোজিনা বেগম তার ছেলেকে না পেয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং-১৭৯, তারিখ ০৫/১০/২০২৫) করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ৩ অক্টোবর সকালে আলিপ ইজিভ্যান চালাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি।
ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে নড়াইল জেলা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে নামে। তদন্তে জানা যায়, আলিপের সঙ্গে স্থানীয় মিনারুল বিশ্বাস (২২) ও হৃদয় মোল্যা (২০) শেষবার দেখা গিয়েছিল।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহভাজন মিনারুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। মিনারুল পুলিশের কাছে স্বীকার করে, সে ও হৃদয় মোল্যা পরিকল্পিতভাবে আলিপকে কোমল পানীয়র সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে, এরপর দেবভোগ বিল এলাকায় নিয়ে গলা চেপে হত্যা করে এবং মৃতদেহ পাশের ডোবার কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখে।
পরদিন ঘাতকরা আলিপের ইজিভ্যানের ব্যাটারি খুলে নড়াইল শহরের মুচিরপোল এলাকায় বিক্রি করে দেয়।
পুলিশ অভিযানে ব্যাটারি, ইজিভ্যান ও ভিকটিমের ব্যবহৃত স্মার্টফোন উদ্ধার করে।
ঘটনার পর ৬ অক্টোবর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে পালানোর সময় হৃদয় মোল্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভিকটিমের মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় হত্যা মামলা (নং-০৭, তারিখ ০৬/১০/২০২৫, ধারা-৩০২/২০১/৩৭৯/৪১১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০) দায়ের করেন।
গ্রফতারকৃত দুই আসামি আদালতে হাজির হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) নূর এ আলম সিদ্দিকী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম এবং নড়াইলের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ।