বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চার জন্য রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা থাকা উচিত। কিন্তু বর্তমান নিবন্ধন প্রক্রিয়া নতুন দলগুলোর জন্য এক প্রকার নিষেধাজ্ঞা হিসেবে কাজ করছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালের পূর্বে বাংলাদেশে যে কোনো নাগরিক সহজেই রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারতেন। তখন এ নিয়ে আইনি জটিলতা বা অতিরিক্ত শর্তের বেড়াজাল ছিল না। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচন কমিশন যে তিনটি প্রধান শর্ত দিয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইসির বর্তমান শর্তাবলি:
১৯৭২ সালের নিয়ম অনুসারে, কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে হলে তাদেরকে নিম্নোক্ত তিনটি শর্তের যেকোনো একটি পূরণ করতে হয়:
১. স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত যেকোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অন্তত একটি আসনে জয়লাভ। ২. নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আসনগুলোতে দলের প্রার্থীদের মোট ভোটের ৫ শতাংশ অর্জন। ৩. দেশের এক-তৃতীয়াংশ জেলার কার্যালয়সহ একটি কার্যকর কেন্দ্রীয় কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মহানগরের থানায় ২০০ জন ভোটার সদস্যসহ দলীয় কার্যালয় স্থাপন।
জমাদারের ভাষ্য অনুযায়ী, এই শর্তগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে কেবল পুরনো ও প্রভাবশালী দলগুলোই টিকে থাকতে পারে। এতে করে নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান রুদ্ধ হয় এবং জনগণের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত হয় না।
তিনি আরও বলেন, “নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দলকে শুধু গঠনতন্ত্র, কেন্দ্রীয় কমিটি, প্রতীক, ব্যাংক একাউন্ট, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং নির্ধারিত নিবন্ধন ফি প্রদানের ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়া উচিত। রাজনৈতিক দলের প্রাথমিক সাংগঠনিক কাঠামো যাচাই করাই ইসির দায়িত্ব হওয়া উচিত, ভোটের হার কিংবা আসন জয়ের ইতিহাস নয়।”
তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নামে গড়ে তোলা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে এবং জনগণের রাজনৈতিক অধিকারকে প্রাধান্য দিতে হবে।
উপসংহারে তিনি বলেন, “গণতন্ত্র মানে বিকল্প চিন্তা ও মত প্রকাশের সুযোগ। নতুন দল গঠনে বিধিনিষেধ আরোপ করে সেই অধিকার হরণ করা হচ্ছে, যা স্বাধীন রাষ্ট্রে কাম্য নয়।”