• 10 May, 2024

ভিডিও: ফুকুশিমার মাছ খেলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

ভিডিও: ফুকুশিমার মাছ খেলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী

জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয় দূষণ-যুক্ত পানি গত সপ্তাহে সাগরে ছাড়তে শুরু করে জাপান। দূষিত এই পানি সাগরে ছাড়া নিয়ে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের সঙ্গে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা।

জাপান অবশ্য এই পানিকে নিরাপদ বলছে এবং এই পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলের সাশিমি মাছ খেয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। পরে তিনি এই মাছকে ‘খুব সুস্বাদু’ বলে অভিহিত করেন। বুধবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপান সরকারের প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে ফুকুশিমার ‘খুব সুস্বাদু’ মাছ সাশিমি খেতে দেখা যায়। প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরোধিতার মধ্যেই জাপান ফুকুশিমা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শোধন করা তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ছাড়তে শুরু করার পর সেখানকার মাছ খেয়ে দেখালেন তিনি।

চীন অবশ্য জাপানের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি সমুদ্রে ছাড়ার এই পদক্ষেপের কঠোর বিরোধিতা করেছে। দেশটি বলেছে, জাপান সরকার প্রমাণ করতে পারেনি যে, নিষ্কাশন করা পানি নিরাপদ হবে। আর এই কারণে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে জাপানি সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে চীন।

এছাড়া একই পদক্ষেপ নিয়েছে জাপানের আরেক প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়াও।

অন্যদিকে ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভিত্তিহীন দাবি’ ছড়ানোর জন্য চীনের সমালোচনা করেছে জাপান। দেশটির দাবি, ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি মানুষ এবং পরিবেশের ওপর ‘নগণ্য’ প্রভাব ফেলবে বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থাও (আইএইএ)।

প্রসঙ্গত, ১০ লাখ টনের বেশি তেজস্ক্রিয় পানি জমা হয়েছে ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। আগামী ৩০ বছরে এই পানি সমুদ্রে ছাড়া হবে। জাপানের দাবি, এই পানি নিরাপদ।

তবে সমালোচকরা বলছে, এ নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা দরকার ছিল। এই পানি ছাড়ার পরিকল্পনা আপাতত বন্ধ রাখা উচিত ছিল। কারণ এই পানি এখনও বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। এর ফলে গোটা বিশ্বই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশগুলোর বিরোধিতা সত্ত্বেও ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে গত বৃহস্পতিবার তেজস্ক্রিয় দূষণ-যুক্ত পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ছাড়তে শুরু করে জাপান। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১২ বছর আগে সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

মূলত জাপানে ২০১১ সালে ভূমিকম্পের পর যে সুনামি সৃষ্টি হয়, তা ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রটি প্রায় ধ্বংস করে ফেলে। পরমাণু কেন্দ্রটির শীতলীকরণ ব্যবস্থা বিকল হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে পরমাণু চুল্লীর কেন্দ্রটি সাংঘাতিক উত্তপ্ত হয়ে উঠে।

আর এরপরই এই কেন্দ্রের পানি তখন তেজস্ক্রিয় পদার্থের সঙ্গে মিশে দূষিত হয়ে পড়ে।

জাতিসংঘের পরমাণু নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, এই পানিতে তেজস্ক্রিয় দূষণের মাত্রা এত কম যে তা মানুষ এবং পরিবেশের ওপর খুব সামান্যই প্রভাব ফেলবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, সাগরের তলদেশে, সামুদ্রিক প্রাণী এবং মানুষের ওপর এই পানির কী প্রভাব পড়ে, সেটি নিয়ে আরও গবেষণা দরকার।