• 04 May, 2024

ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সিইসির কাছে অভিযোগ

ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সিইসির কাছে অভিযোগ

আচরণ বিধিভঙ্গ করে নির্বাচনী প্রচারণায় দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশক তারিন হোসেনের উদ্দেশ্যে কটুক্তি বা চরিত্রহনন করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম মিরাজেরর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর আবেদন জানিয়েছেন পিরোজপুর-২ আসনের নৌকার প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মেয়ে তারিন

এর আগেও ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনের সময় মিরাজ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এক সাংবাদিককে উপজেলা চত্বরে টাঙ্গিয়ে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছিল। ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠিও দিয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আজ পর্যন্ত বিতর্কিত মিরাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার সিইসির কাছে আবেদন জানিয়ে তারিন হোসেন বলেন, তিনি পিরোজপুর-২ আসনের একজন ভোটার। তার বাবা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ উপজেলা) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মহিউদ্দীন মহারাজ। নির্বাচনী প্রচার চলাকালে ২৪ ডিসেম্বর ভান্ডারিয়ার ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়নের আহজারিয়া মাদ্রাসায় এক নির্বাচনী জনসভায় প্রার্থী মহিউদ্দীন মহারাজের উপস্থিতিতে তার ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম তাকে (তারিন হোসেন) ঘিরে অত্যন্ত আপত্তিকর, কুরুচিপূর্ণ, অশালীন, মিথ্যা, বানোয়াট, বেআইনি, মানহানিকর ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। উক্ত বক্তব্য সুস্পষ্টতই সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ (সর্বশেষ সংশোধিত ২০২৩) এর লঙ্ঘন।

তারিন হোসেন অভিযোগে আরও বলেন, মিরাজুলের বক্তব্য বাংলাদেশের অন্যান্য প্রচলিত আইন, যেমন বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০ সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩–সহ বিভিন্ন আইন অনুসারে ফৌজদারি অপরাধও বটে। তার এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন বক্তব্যের কারণে পরিবার, আত্মীয়স্বজন, পিরোজপুর-২ আসনের ভোটার এবং সমগ্র এলাকাবাসীর কাছে হেয়-প্রতিপন্ন হচ্ছেন তারিন হোসেন। তার বক্তব্য এখনো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিনিয়ত সম্প্রচারিত হচ্ছে। এতে তিনি প্রতিনিয়ত হেয়-প্রতিপন্ন হচ্ছেন এবং চরম সামাজিক ও মানসিক পীড়ায় আছেন।

আচরণবিধিমালায় ব্যক্তির উসকানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান, উচ্ছৃঙ্খল আচরণে বাধানিষেধ আছে উল্লেখ করে তারিন হোসেন অভিযোগে বলেন, 'কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি বিধি-১১ এর (ক) অনুসারে "নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্রহনন করিয়া বক্তব্য প্রদান বা কোন ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক মানহানিকর) কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করিতে পারিবেন না।" তা সত্ত্বেও উক্ত প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণাকালে তার ভাই এসব বক্তব্য প্রদান করেন। এমতাবস্থায়, একজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগ (ভিডিওসহ) আপনার নিকট দাখিল করলাম।'

এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, এ ধরনের অভিযোগ নজরে এসেছে। অভিযোগ তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসআর/এসএম