• 08 May, 2024

তফসিল ঘোষণা: দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠক

তফসিল ঘোষণা: দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি এবং তফসিল ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে আবহিত করতে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর ) দুপুর ১২টায় এই উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করতে বঙ্গভবনে যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এতে চার কমিশনার, ইসি সচিবসহ কমিশনের কয়েকজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা অংশ গ্রহণ করবেন। বৈঠকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, করে নাগাদ নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করা হবে এবং নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হবে।

এ উপলক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন অত্যাসন্ন। সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। রেওয়ারজ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে কমিশন মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কমিশন সাক্ষাতের সূচি রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন প্রস্তুতি সংক্রান্ত সব ধরনের অগ্রগতি বিষয়ে তা অবহিত করবেন। প্রস্তুতি নিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি পরামর্শ ও নির্দেশনা থাকলে তা কমিশন শুনবেন। তফসিল ঘোষণার এখতিয়ার সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। এ সংক্রান্ত কমিশন সভাই এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি।’

সচিব জানান, ইতোমধ্যে কমশন বারবার বলেছেন, নভেম্বর মাসের দ্বিতীয়ার্ধের যে কোনো দিন তফসিল হতে পারে। সেই হিসাবে ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার শেষ সময়ে এসে কমিশনের মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে প্রধান নির্বাচন কমিশান কাজী হাবিবুর আউয়ালের সঙ্গে কমিশনার আনিছুর রহমান এবং মো. আলমগীরের ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। এই দুই কমিশনারের সঙ্গে সিইসির মতবিরোধের কারণে তফসিল পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের তাদের মতবিরোধ কমিয়ে আনতে দফায় দফায় বৈঠক করছে ইসির অপর দুই কমিশনার আহসান হাবিব খান ও রাশেদা বেগম। তবে তাদের মধ্যে এখনো বরফ গলেনি।

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার পর পরবর্তী পাঁচ বছরের আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণ করতে হবে। সেই হিসাবে গত ৩১ অক্টোবর থেকে ৯০ দিনের নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচনের আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই অবস্থায় যথাযথ সময়ে নির্বাচন সম্পৃন্ন করতে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে নির্বাচনের উপকরণ কেনাকাটা শেষের পথে রয়েছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনি উপকরণ মাঠ পর্যায়ে পাঠানোর প্রক্রিয়াও শুরু করেছে ইসি। বিভিন্ন ধরনের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। পাশাপাশি সরকারি মুদ্রণালয়কে ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য উপকরণ ছাপানোর নির্দেশনাও দিয়েছে কমিশন। নভেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে। ফলে আগামী ১৩ অথবা ১৪ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সাধারণ তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচন  পর্যন্ত মাঝখানে রেওয়াজ অনুযায়ী ৪৫ থেকে ৬০ দিন সময় হাতে রাখা হয়। সে হিসাবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা বেশি।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন। আর নারী ভোটার সংখ্যা ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। 

এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২ জন। নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১০৩টি। এতে ভোটকক্ষ রয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজারের মতো।