জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে জাতীয় পার্টির মতামত প্রয়োজন মনে করছি না
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিলেও জাতীয় পার্টির মতামত প্রয়োজন মনে করছি না বলে মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন, অঙ্গীকার ও শপথ সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সৃষ্টি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রোববার (২৩ জুন) আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ এই দেশের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আমরা এক কথায় বলতে পারি, সংগ্রাম, সাফল্য ও সংস্কৃতির বর্ণিল প্রতিভাসের নাম আওয়ামী লীগ। দুটি পর্বে আমাদের এই সংগ্রাম, আন্দোলন, অর্জন উন্নয়নকে যদি ভাগ করি একটি অংশে স্বাধীনতা। স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা কেন্দ্রাতীত শক্তি হচ্ছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পলাশীতে যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে সে সূর্য আবার উদিত হয়েছিল। উদিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন, অঙ্গীকার ও শপথকে সামনে রেখে।
তিনি বলেন, জনগণের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়ে প্রতিরোধের দাবানল ছড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনার নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আমরা মৃত্যুর মিছিলে দাঁড়িয়ে জীবনের জয়গান গাই। আমরা ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির পতাকা উড়াই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে জিয়াউর রহমান নিঃশেষ করে দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতার আদর্শ সব কিছুই আঘাতে আঘাতে জর্জরিত। ঐতিহাসিক ৭ জুন ছিল না, ৭ মার্চ ছিল না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিষিদ্ধ। জয়বাংলা ছিল নিষিদ্ধ। তখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি ঘুরে বেড়াতো বুক ফুলিয়ে জিয়াউর রহমানের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে। কারাগারে চার নেতার হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়ার পরে এরশাদ, এরশাদের পর বেগম খালেদা জিয়া— একুশ বছর ধরে আমরা অন্ধকারে ছিলাম। একুশ বছর ধরে আমাদের গণতন্ত্র ছিল নির্বাসনে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বিজয়ের নায়ক, স্বাধীনতার স্থপতিকে বাদ দিয়ে উদযাপন করা হতো।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ছয় বছর পর শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অন্ধকারে আশার আলো হয়ে এসেছিল। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন বলেই গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। তিনি এসেছিলেন বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পুনরুত্থান হয়েছে। গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন ঘটেছে। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল স্বাধীনতার আদর্শের প্রত্যাবর্তন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অর্জন বাংলাদেশের জন্য সারা পৃথিবীতে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বব্যাংককে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন আমরাও পারি। আমাদের সামর্থ্যের প্রতীক, আমাদের সক্ষমতার প্রতীক এই পদ্মা সেতু নিজের টাকায় করেছেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঢাকায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবারি গভীর সমুদ্র বন্দর, স্যাটেলাইট, ৬৮ বছরের সীমান্ত সমস্যা, ছিটমহল সমস্যার সমাধান এসব অর্জন বঙ্গবন্ধুর কন্যার।
আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরে অর্জন কী, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের অর্জনের কথা আমরা বলবো না। ৭৫ বছরে আমাদের অঙ্গীকার হচ্ছে, আমরা আমাদের রক্তের মূল্যে অর্জিত বিজয়কে সুসংহত করবো। আমাদের চলার পথে প্রধান বাধা বিএনপি, মুক্তিযুদ্ধের নামে এরা ভাওতাবাজি করে। আমাদের সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তি আমাদের অভিন্ন শত্রু। এই অভিন্ন শত্রু বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের আজকে শপথ এই অভিন্ন শক্তিকে পরাজিত করতে হবে। পরাভূত করতে হবে। আমাদের বিজয়কে আমরা সুসংহত করবো। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অভিমুখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করবো।
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লির সফর নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যা নিয়ে এসেছেন সেটা নিয়ে এখনো বিশ্লেষণ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী দিল্লি গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলে যাননি। বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণে এখানে যা বলার দরকার কোনো কিছু বলতে সংকোচ করেননি। ভুলে যাননি।
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিলেও জাতীয় পার্টির মতামত প্রয়োজন মনে করছি না বলে মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিগত ১৬ বছর ধরে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু মনোভাবের কারণে ফেলানী হত্যার বিচার হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্বের সেক্রেটারি আসিফ আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বিএসএফ সুযোগ পেয়ে প্রায় ছয় শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।