এই ঘটনায় বেশ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, হাসপাতাল কখনও যুদ্ধক্ষেত্র হওয়া উচিত নয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এই মন্তব্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানের পর বুধবার জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, হাসপাতালগুলো কখনোই যুদ্ধক্ষেত্র হওয়া উচিত নয়।
বুধবার নিজের দৈনিক ব্রিফিংয়ে ডুজারিক বলেন, ‘হাসপাতালগুলো যুদ্ধক্ষেত্র হওয়া উচিত নয়। লড়াইরত দলগুলোর কোনও হাসপাতালে লড়াই করা উচিত নয়। হাসপাতালগুলো বিশ্বের কোথাও যুদ্ধক্ষেত্র হওয়া উচিত নয়।’
মূলত, গাজার বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালটি কয়েকদিন ধরে ঘেরাও করে রাখার পর বুধবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই মেডিকেল কমপ্লেক্সে অভিযান চালায়।
পরে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বুধবার জানায়, ‘ইসরায়েলি সৈন্যরা আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সের ভেতরে অনেক রোগী, আহত ব্যক্তি এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের পাশাপাশি বেশ কিছু চিকিৎসা ও নার্সিং কর্মীদের ওপরও আক্রমণ করেছে, তাদের পোশাক খুলতে বাধ্য করেছে এবং অপমান করেছে।’
ডুজারিক বলেন, ‘আমরা যা দেখছি তা নিয়ে আমরা খুব উদ্বিগ্ন। আমরা এখন শুধু এসব রিপোর্টগুলো দেখছি কারণ আমাদের সেখানে কোনও লোক নেই। আমাদের কথা স্পষ্ট, হাসপাতালগুলো কোনওভাবেই যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত।’
জাতিসংঘ আল-শিফা হাসপাতালে ‘খুব বিরক্তিকর’ দৃশ্য ও প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার জন্য সকল পক্ষকে আহ্বান জানান।
এর আগে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে গাজার সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে অভিযান চালায় ইসরায়েলি সৈন্যরা। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা আল-শিফা হাসপাতালের নির্দিষ্ট এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।
হাসপাতালটিতে হামাসের ঘাঁটি রয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এছাড়া ইসরায়েলের এই দাবিকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্রও জানিয়েছে, তাদের কাছেও আল শিফা হাসপাতালের নিচে সুড়ঙ্গে হামাসের একটি ‘কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টার’ থাকার তথ্য রয়েছে।
তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে আল শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে একে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
বুধবার ফিলিস্তিনের বার্তাসংস্থা ওয়াফা-তে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা বলেছেন, ‘আল-শিফা হাসপাতালে অবস্থানরত রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং উদ্বাস্তু নাগরিকদের কোনও ক্ষতি হলে তার জন্য ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।’