বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, জেলায় বিভিন্ন হাট, বাজার ও বিভিন্ন গ্রামে তিন শতাধিক কামারশালা রয়েছে। আর এ পেশার সাথে জড়িত আছে অন্তত ১২শ কারিগর ও শ্রমিক। জেলার তিনটি উপজেলার ছোট-বড় অন্তত ১৫টি হাটে বাজারে পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় হয় এসকল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র। আকার ভেদে একেক টি চাপাটি ৬শ থেকে ৮শ টাকা কেজি, জবাই এর ছুরি ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা পিস, ছোট ছুরি ৮০-১শ টাকা পিস, বটি ৫শ থেকে ৬শ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এসকল কামার শালায় ও হাট বাজারে ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার রায়গ্রাম কলাগাছি ও নলদী বাজারে কামারশালার অন্ধকার ঘরে লোহা পেটানোর শব্দ আর শান দেবার যন্ত্র ঘুরছে অবিরাম। কয়লায় আগুন ধরাতে হাপরের বিশ্রাম নেই, কামারশালার পাশে বাড়ছে পোড়া কয়লার স্তুপ। এসকল কামারশালায় ঈদকে সামনে রেখে তৈরি হচ্ছে খদ্দেরের পছন্দমত বিভিন্ন সাইজের চাপাতি, গরু জবাই করা বড় ছুরি , চামড়া ছোলার ছোট ছুরি, দা, বটি, কুড়াল, কাস্তে, আর ছোট চাকুর মতো লোহার সব গৃহস্তলী কাজে ব্যবহৃত জিনিস-পত্র।
কলাগাছি বাজারের কামার আনন্দ জানায়, তার বাপ দাদারা এ পেশায় ছিল। তিনিও ছোট বেলা থেকে এ কাজ শিখেছেন। তিনি ও কামারশালায় কাজ করেন। সারা বছর তিনি লোহা দিয়ে গৃহস্থালীর বিভিন্ন প্রকার জিনিস পত্র তৈরী করে তা স্থানীয় মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন।
ওই দোকানের কারিগর আশু দা জানান, কোরবানি ঈদ কে সামনে রেখে এক থেকে দেড় মাস কাজের চাপ বাড়ে। চলতি মৌসুমে দেড় মাসে তাদের ৫০ হাজার টাকার জিনিস পত্র বিক্রি হতে পারে।
ক্রেতা রুবেল হোসেন বলেন, গরু কোরবানী জন্য জবাই করা ছুরি ও চাপাটি কিনতে এসেছি ৪৫০ টাকা দাম রেখেছে।
কামরুজ্জামন বলেন, গরু কোরবানী জন্য গত বছর ছুরি ও মাংস বানোর জন্য চাপাটি বাননো হয়েছিলো। আগে আগে এবার সেগুলো সান দিয়ে রেডি করে রাখছি।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন(বিসিক) নড়াইল এর উপ ব্যাবস্থাপক প্রকৌশলী মোঃ সোলাইমান হোসেন বলেন, নড়াইলের কারিগরদের তৈরী জিনিসপত্রের মান খুবই ভালো, এ সকল জিনিসের বেশ কয়েকটি জেলায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারিগররা নিজেরা যদি উৎসাহিত হয়ে নতুন করে কোন প্রতিষ্ঠান করতে চায় আমরা তাদেরকে সাহায্য করবো। কামারদের আধুনিকায়ন করার জন্য তাদেরকে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।