• 01 May, 2024

‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোবে বলেই বিএনপি জিয়া হত্যার বিচার করেনি’

‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোবে বলেই বিএনপি জিয়া হত্যার বিচার করেনি’

কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোবে বলেই ক্ষমতায় এসেও বিএনপি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেনি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

জিয়াউর রহমানকে তার দলের লোকজনই হত্যা করেছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সোয়া দুই দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু জিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার করেননি। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোবে জন্যই জিয়া হত্যাকাণ্ডের বিচার করেননি। খালেদা ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকের বিএনপিও সেই হত্যার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।

রোববার (২৭ আগস্ট) গ্রেনেড হামলায় নিহত আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে আইভী রহমান পরিষদ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২৪ জন নিহত এবং বহু নেতাকর্মী আহত হন। নিহতদের মধ্যে আইভি রহমান হামলার তিন দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

রোববার রাজধানীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে পরিচালনা করা হয়েছিল। হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেক রহমান। তার পরিকল্পনায় হাওয়া ভবনে কয়েক দফা বৈঠক হয়। সেগুলো ২১ আগস্টের মামলার প্রসেডিংয়ে আছে। কখন, কোথায় বৈঠক হয়? হাওয়া ভবনে কয়বার বৈঠক হয়। আমি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাক্ষী।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যে গ্রেনেডগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলো সন্ত্রাসীদের কাছে থাকার কথা নয়। এগুলো সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত গ্রেনেড। এগুলো হামলাকারীদের কাছে কীভাবে গেল? রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা ছাড়া এগুলো তাদের হাতে যাওয়ার উপায় নেই।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মোস্তাক এবং জিয়া। আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক জিয়া। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাটাও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছে। তার বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে ক্যু এর প্রচেষ্টা হয়েছে, তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছিল। এভাবে জিয়াউর রহমান ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার চেষ্টা করেছিল, করতে পারেনি। তার লোকেরাই তাকে হত্যা করেছে।  

আইভী রহমানের স্মৃতিচারণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, আইভী রহমান একজন কর্মীবৎসল নেত্রী ছিলেন। তিনি কর্মীদের সঙ্গে উঠতেন, চলতেন, বসতেন, এমন কোনো মিটিং নেই, যেখানে তিনি থাকতেন না। তিনি সৌখিন ছিলেন। যত্নসহকারে স্বামীর খোঁজখবর রাখতেন।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় তিন নেতার সিঙ্গাপুর যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পত্র-পত্রিকায় লিখছে, তারা কী আদৌ চিকিৎসা নিতে গেলেন, নাকি আবার কোনো ষড়যন্ত্র করতে একসঙ্গে সিঙ্গাপুর গেলেন। এটি অনেকের প্রশ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও আইভী রহমান পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

আইভী রহমান পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান খোকার সঞ্চালনায় ও সদস্য মুহাম্মদ রোকন উদ্দিন পাঠানের সহযোগিতায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।