গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ‘পূর্ণ সমর্থন’ ট্রাম্পের: হোয়াইট হাউস
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত কয়েকদিনে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৭০০ ফিলিস্তিনি।
পাকিস্তানশাসিত আজাদ কাশ্মির নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের উদ্দেশ্যে পাল্টা তোপ দেগেছেন ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, (কাশ্মির ফিরিয়ে আনতে) কে বাধা দিয়েছে? শুধু পাকিস্তানের কাশ্মির নয়, চীনের অধীনে থাকা কাশ্মিরেরও অংশও ফিরিয়ে আনুন।
এমনকি কার্গিল যুদ্ধের সময় কী পাকিস্তানের দখলে থাকা কাশ্মির ফিরিয়ে আনা গিয়েছিল কিনা সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির ভারতের অংশ হলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে জয়শঙ্করের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওমর আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বৃহস্পতিবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে বিধানসভায় বিজেপি সদস্যদের তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মিরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে, যা তৎকালীন মহারাজা হরি সিংয়ের সময়কার আকৃতির মতো নয়।
জম্মু ও কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথাও উল্লেখ করে জিজ্ঞাসা করেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরকে (ভারতে) “ফিরিয়ে আনতে” বিজেপি সরকারকে কে বাধা দিচ্ছে?
লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাশ্মির সমস্যার সমাধান অনেকটাই হয়ে গেছে। পাকিস্তান কাশ্মিরের যে অংশ “দখল করে রেখেছে” তা ফেরত পেলেই সেখানকার সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়ে যাবে।
এরপরই বিধানসভার অধিবেশনে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন জম্মু ও কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “জম্মু-কাশ্মিরের একটা অংশ পাকিস্তানের কাছে আছে। এখানকার মানচিত্র দেখলেই দেখা যাবে (কাশ্মিরের) আরেকটা অংশ আছে চীনের দখলে। সেটা নিয়ে কেউ কোনও কথা বলছেন না কেন?”
ওমর আবদুল্লাহ বলেন, “আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন— পাকিস্তানের কাশ্মীর, যেটা জম্মু ও কাশ্মিরের অংশ তা ফিরিয়ে আনবেন। কে তাদের বাধা দিয়েছে? আমরা কী কখনও বলেছি যে তা ফিরিয়ে আনবেন না। আমরা বলছি, যদি আপনারা ওই অংশ ফিরিয়ে আনতে পারেন তাহলে তা ফিরিয়ে আনুন।”
এরই সঙ্গে কার্গিল যুদ্ধের সময়ে কেন ওই অংশ ফিরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জম্মু ও কাশ্মিরের এই মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া কেন হাজিপার সেক্টরকে পাকিস্তানের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জম্মু ও কাশ্মিরের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হাজিপারের কথা ছেড়ে দিন, যখন কার্গিল যুদ্ধ হয়েছিল তখন কী পাকিস্তানের দখলে থাকা অংশ ফিরিয়ে আনা গিয়েছিল? সেটা তো পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার একটা সুযোগ ছিল... ওকে, (পারলে) এখন ফিরিয়ে আনুন।”
উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দুটি দেশ পাকিস্তান ও ভারত বিতর্কিত কাশ্মিরের পুরোটাই দাবি করলেও উভয়েই এর কিছু অংশ শাসন করে থাকে। তারা এই হিমালয় অঞ্চল নিয়ে তিনটি যুদ্ধের মধ্যে দু’টিতে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। এখন উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে, তবে ইতিহাস বলছে, ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তান আর ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার আগে থেকেই কাশ্মির নিয়ে বিতর্কের সূচনা হয়েছিল।
১৯৪৭ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের পাশতুন উপজাতীয় বাহিনীগুলোর আক্রমণের মুখে কাশ্মিরের তৎকালীন হিন্দু মহারাজা হরি সিং ভারতে যোগ দেওয়ার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, এবং ভারতের সামরিক সহায়তা পান। পরিণামে ১৯৪৭ সালেই শুরু হয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ।
এছাড়া ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে চীন কাশ্মিরের আকসাই-চিন অংশটির নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। আর তার পরের বছর পাকিস্তান - কাশ্মিরের ট্রান্স-কারাকোরাম অঞ্চলটি চীনের হাতে ছেড়ে দেয়।
সেই থেকে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তান, ভারত ও চীন - এই তিন দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে।
অন্যদিকে জওহরলাল নেহেরুর সময়ে ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মিরকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা ৩৭০ ধারা ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট বাতিল করে ভারত। সেসময় জম্মু ও কাশ্মির রাজ্য পুরোপুরি মুছে ফেলে এটিকে লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মির নামে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত করা হয়।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত কয়েকদিনে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৭০০ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি বাণিজ্যিক কেন্দ্র খ্যাত তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলের নতুন করে স্থল ও আকাশপথে হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি বৃদ্ধির প্রতিশোধে বৃহস্পতিবার এই হামলা চালানোর দাবি করেছে গোষ্ঠীটি।
পবিত্র রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে দখলদার ইসরায়েলের গাজায় চালানো নির্বিচার হামলায় গত দুদিনে অন্তত ৯৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বুধবার গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানির এই তথ্য জানানো হয়েছে।