২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিনা রক্তপাতে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই সময় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত ও অবরুদ্ধ করা হয়।
ক্ষমতা দখলে পর দ্রুত দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেয় জান্তা। তবে নতুন করে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নির্বাচন আরও পেছালো তারা।
এ ব্যাপারে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জান্তা বাহিনী বলেছে, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় এবং বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ত সুয়ে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।’
অং সান সুচিকে ক্ষমতাচ্যুত করেই দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কিন্তু সেবার এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। তারা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এ কারণে সাধারণ মানুষের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় ও হত্যাযজ্ঞ চালায় জান্তা বাহিনী।
এরপর জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তারা। এছাড়া অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোও আরও সক্রিয় হয়।
সশস্ত্র প্রতিরোধ ঠেকাতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ কয়েকবার বৃদ্ধি করা হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ২০০৮ সালের সংবিধান অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাদের দাবি, এই সংবিধান এখনো কার্যকর আছে। ২০০৮ সালের সংবিধানে বলা আছে, জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
মিয়ানমারের একটি পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের পর অভ্যুত্থান বিরোধী প্রায় ৪ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করেছে জান্তা।
তবে এত দমন-নিপীড়ন চালিয়েও সশস্ত্র প্রতিরোধ ঠেকাতে পারেনি তারা। বিশেষ করে গত তিন মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্য। রাখাইনে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তীব্র হামলার মুখে অনেক জায়গা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সূত্র: এএফপি