বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশটির জাতীয় পরিষদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই ভোটে দেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রী প্রাদেশিক রাজধানী লাহোরের একটি কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর মেয়ে ও দলের প্রধান সংগঠক মরিয়ম নওয়াজকে সাথে নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দেশটির রাজনৈতিক দল ইসতেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টির নেতা আউন চৌধুরী।
দেশটির এবারের নির্বাচনে লাহোরের এনএ-১৩০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নওয়াজ। দেশে স্থিতিশীলতা আনতে ‘একদলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন’ উল্লেখ করে জনগণকে ভোট দেওয়ার জন্য বাসা-বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
‘‘আজ আমরা যেখানে আছি, সেই দিনটির সাক্ষী হওয়ার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আমাদের এই অপব্যবহার ও অশ্লীলতার সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে।’’
পিএমএল-এনের এই নেতা এবারের নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে রেকর্ড চতুর্থ মেয়াদে পাকিস্তানের ক্ষমতায় আসছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া পাকিস্তানে প্রায় বিরোধীবিহীন নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক মাস ধরে ব্যাপক সহিংসতা চলছে। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না দেশটির গত নির্বাচনে বিজয়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তিনি।
এক সময় দুর্নীতির দায়ে রাজনীতিতে আজীবন নিষেধাজ্ঞার দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নওয়াজ শরিফ লন্ডন ও দুবাইয়ে চার বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে গত বছরের শেষের দিকে দেশে ফিরেছেন।
আর তিনি দেশে ফেরার কয়েক মাস আগে কারাগারে গেছেন ইমরান খান। রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য ফাঁস (সাইফার) এবং তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে যথাক্রমে ১০ ও ১৪ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। এই নির্বাচনে প্রার্থিতা করতে পারছেন না তিনি।
তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) যেসব প্রার্থী এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাদের দলের নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন ও আদালত। ফলে নিজেদের বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থীদের তুলনায় বেশ বেকায়দায় আছেন পিটিআই প্রার্থীরা।
নির্বাচনের পরে সরকার গঠন এবং তার সরকারের অগ্রাধিকার কী হবে, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে নওয়াজ বলেছেন, ‘‘একটি দলকে অন্যের ওপর নির্ভর না করে স্বাধীনভাবে দেশ পরিচালনার জন্য অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে। আল্লাহর দোহাই! জোট সরকারের কথা বলবেন না। একদলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’’
এ সময় তিনি শেহবাজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ এবং হামজা শেহবাজসহ পিএমএল-এনের অন্যান্য নেতাদের ত্যাগের কথা তুলে ধরে বলেন, তারা কারাগারে সময় কাটিয়েছেন।
সূত্র: জিও টিভি, ডন।