বাংলাদেশের মানুষ ক্রীড়াপ্রেমী, বিশেষত ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা অনেক। ঘরোয়া ফুটবলের গ্যালারিতে দর্শকখরা থাকলেও দেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় দলের ম্যাচগুলোতে অবশ্য ফুটবলপ্রেমীরা হাজির হন। জাতীয় ফুটবল দলের বাজে ফলাফল ফুটবলপ্রেমীদের অনাগ্রহ তৈরি করলেও সম্প্রতি সাফের পারফরম্যান্স আবারও নবজাগরণ ঘটিয়েছে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা ভেন্যুটি আন্তর্জাতিক অভিষেক হচ্ছে বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়ে। তাই একটু বাড়তি আগ্রহ রয়েছে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের। বাড়তি আগ্রহ-উন্মাদনা থাকলেও মাঠে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না অনেকেই।
গ্যালারি সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন হলে দশ হাজারের কাছাকাছি দর্শক ধারণ ক্ষমতা হবে কিংস অ্যারেনার। আজ আন্তর্জাতিক অভিষেকে কিংস অ্যারেনায় ৬ হাজার দর্শক থাকতে পারবেন। এই ৬ হাজার ধারণক্ষমতায় প্রকৃত সাধারণ দর্শনার্থীদের তেমন সুযোগ নেই বললেই চলে। ফেডারেশন ও ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্তরাই মূলত এখানে প্রাধান্য পাচ্ছেন। ছয় হাজার টিকিটের মধ্যে কিছু অংশ আমন্ত্রিত এবং কিছু টিকিট সৌজন্যমূলক প্রদান করা হবে। কোনো টিকিটই বিক্রি হচ্ছে না, ফলে সাধারণ দর্শকদের টিকিট সংগ্রহ করে খেলা দেখার সুযোগ সেই অর্থে নেই।
জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। ম্যাচ ব্যবস্থাপনার অন্যতম অংশ টিকিটিং। বাফুফে এবার সেই টিকিটিংয়ের দায়িত্ব বসুন্ধরা কিংসকেই দিয়েছে। ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার টিকিট ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ম্যাচটি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের হলেও বসুন্ধরা কিংস ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট সহায়তা করছে। টিকিটিংয়ের দায়িত্বও পালন করছে বসুন্ধরা কিংস। ফুটবল ফেডারেশনের অধিভূক্ত সংস্থা, বিভিন্ন ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানকে তারা টিকিট দিয়েছে। এর বাইরে কিছু টিকিট কিংস সৌজন্যমূলকভাবে বন্টন করবে। তারা তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও অংশীদার করবে ভেন্যুর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের।’
সময় বড় বিচিত্র। এক বছর আগেই কিংস অ্যারেনাকে লিগের ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাফুফে যেখানে গড়িমসি করছিল। এখন জাতীয় দলের ম্যাচের জন্য সেই কিংস অ্যারেনার ওপরই ফেডারেশন নির্ভরশীল। জাতীয় দলের ম্যাচ বাফুফের স্বত্ব হলেও চলমান আফগানিস্তান সিরিজটি দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুরোপুরি বসুন্ধরা কিংসের নিয়ন্ত্রণেই দিয়েছে বলা চলে। অথচ এক মৌসুম আগেই বাফুফের লিগ কমিটি কিংস অ্যারেনায় লিগের ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জল ঘোলা করেছিল।
ওই সময় প্রকৃত অধিকার না পাওয়ায় কিংস আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতের পথে হাঁটছিল। তখন অবশ্য কিংস অ্যারেনাকে লিগের ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর কিছুদিন পর থেকেই বাফুফে জাতীয় দলের অনুশীলনে এই ভেন্যু ব্যবহার করছে। আর এক বছর পর হচ্ছে জাতীয় দলের ম্যাচও।