• 10 Dec, 2024

গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণ উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল চালিকা শক্তি

গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণ উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল চালিকা শক্তি

নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার এবং গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণ স্মার্ট, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার (৯ আগস্ট) ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, গ্যাস সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার এবং গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক অবকাঠামো নির্মাণ স্মার্ট, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ও বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার ও জ্বালানির অপচয় রোধ করে সাশ্রয়ী ব্যবহার টেকসই উন্নয়ন অর্জন গতিশীল করবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২৩’ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জনে যে সকল ঐতিহাসিক ও দূরদর্শী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেগুলোকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যেই প্রতি বছর এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন তিনি মনে করেন , আওয়ামী লীগ সরকারের রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবারের প্রতিপাদ্য- ‘স্মার্ট বাংলাদেশের প্রত্যয়, জ্বালানির সাশ্রয়’- যথার্থ হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট বিদেশি তেল কোম্পানি শেল অয়েল হতে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেন। জাতির পিতার এ অবিস্মরণীয় ও সাহসী সিদ্ধান্ত দেশে জ্বালানি নিরাপত্তার গোড়াপত্তনসহ জ্বালানির মজুদ বৃদ্ধি, দ্রুত সরবরাহ ও বিতরণে অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলছে। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের সরকার নতুন নতুন উৎস থেকে জ্বালানি আহরণ এবং জ্বালানি সমৃদ্ধ দেশসহ আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এলএনজি আমদানি অব্যাহত রেখেছে। আমদানিকৃত এলএনজি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। আমাদের ‘রূপকল্প-২০৪১’ অর্জনে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এলএনজি আমদানির পাশাপাশি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণসহ মাতারবাড়ি ও পায়ারায় ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের গ্যাসক্ষেত্রসমূহে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান, বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার এর ক্ষেত্রে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সুন্দলপুর, শ্রীকাইল, রূপগঞ্জ, ভোলা নর্থ, জকিগঞ্জ ও ইলিশা নামে মোট ৬টি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। তাছাড়া বঙ্গোপসাগরে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের লক্ষ্যে ‘মডেল পিএসসি ২০২৩’ প্রণয়নের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। গ্যাস নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন এবং রংপুর-নীলফামারী-পীরগঞ্জ বিতরণ পাইপলাইন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রায় ৪ লাখ প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হয়েছে। সকল আবাসিক গ্যাস গ্রাহককে প্রিপেইড গ্যাস মিটারের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ২০০৯ সালের তুলনায় প্রায় ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি করেছি। আমদানিতব্য ক্রুড অয়েল ও পরিশোধিত ডিজেল স্বল্প সময়ে নিরাপদে ও ব্যয় সাশ্রয়ীভাবে খালাস ও পরিবহনের জন্য এস পিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দেশের জ্বালানি তেলের পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইআরএল (ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড) ইউনিট-২ স্থাপনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। জ্বালানি তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে দ্রুত, সহজ, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ীভাবে পরিবহনের জন্য ইতোমধ্যে ১৩১.৫ কি.মি. দীর্ঘ ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন স্থাপন সম্পন্নসহ মোট ৬২৪ কিলোমিটার জ্বালানি তেল পাইপলাইন স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।