রোববার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের প্রথম কনভেনশনে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে ও আগুন দিয়ে গাড়ি পুড়িয়ে আর যাই হোক সরকার পরিবর্তন করা যায় না। সরকার পরিবর্তন করতে হলে জনগণের দরকার হয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হয়। আমরা ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে ও ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন সংগ্রামগুলো করেছিলাম... তার ফলে পরিবর্তন এসেছিল।’
তিনি বলেন, ‘যদিও দুর্ভাগ্যক্রমে প্রতিটা ক্ষেত্রেই সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে, আবারও দেশটাকে পিছিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তারপরেও বলব পরিবর্তন হয়েছিল। নতুন সম্ভাবনার দাঁড় উন্মোচিত হয়েছিল। যার ফলে ২০০৮ সালে আমরা একটি নির্বাচন করতে সফল হয়েছিলাম। তাই আমি আজকে বিএনপিকে বলব নির্বাচনে আসুন। এখনো সময় আছে। নির্বাচনে এসে তার মধ্য দিয়ে আমরা যা হয় করি।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে মেনন বলেন, ‘বিদেশি শক্তি আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল ভারতে এসেছে। ভারতে এসে তাদের আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল বাংলাদেশের নির্বাচন। যখন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় পরাশক্তি বা আঞ্চলিক শক্তির বিবেচনার বিষয় হয়ে যায়, তখন দেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত বা জনগণের সিদ্ধান্ত কোথায় এসে দাঁড়ায়?’
‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লম্ফঝম্প করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং প্রতি মুহূর্তে আমাদেরকে একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলছেন। আমি বিভিন্ন সময় বলেছি নিজেদের দিকে তাকান। আমেরিকার নির্বাচনে তারা রাশিয়ার ভূমিকাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। আমেরিকার নির্বাচনের ফল নিয়ে বিতর্ক আছে। সেখানে নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার জন্য ক্যাপিটাল হিলে আক্রমণ হয়েছিল। তাহলে আমার দেশে এসে আমার দেশের ব্যাপার নিয়ে নিয়ে তাদের এত মাথা ঘামানোর দরকার কী?’
‘আমি জানি না ভারতের সাথে আলোচনায় তারা (আমেরিকা) সর্বশেষ কোন অবস্থান গ্রহণ করবে। তবে নির্বাচন যে খুব সুখময় হবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। যদিও বিএনপি অবরোধ ও হরতাল দিচ্ছে। তারা ২০১৪ সালে যেভাবে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। নির্বাচনের দিন প্রিজাইডিং অফিসারকেও হত্যা করেছিল। ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের নির্বাচনী এলাকায় ১১২টি কেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কার্যকর কিছু করতে পারে নাই। সেই পরিস্থিতি আজকে কিন্তু নেই।’
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘আমাদের খেয়াল রাখতে হবে জনগণ যাতে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তার জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘দেশ এখন ক্রান্তিলগ্নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সরকারদলীয় মন্ত্রীরা বলেন যে, সিন্ডিকেট কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না। দেশের রাজনীতিতেও এখন সিন্ডিকেট রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গাড়ি পুড়িয়ে কোনো সমাধান হবে না। গণহারে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সমাধান করা যাবে না। সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে তাদের সমস্যা সমাধান করতে পারে।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মাজহারুল হক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেনসহ অনেকে।