শনিবার (১১ নভেম্বর) সংস্থাটি নিজেই এই তথ্য জানিয়েছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে হাসপাতালটিতে আটকে পড়া মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ জানিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (১২ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল শিফা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে শনিবার জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে হাসপাতালে আটকে পড়া প্রত্যেকের নিরাপত্তা নিয়ে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার পর গাজা ভূখণ্ডের বৃহত্তম আল শিফা হাসপাতাল কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা শনিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ডব্লিউএইচও বলছে, তারা ‘স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি সেখানকার শত শত অসুস্থ ও আহত রোগী, লাইফ সাপোর্টে থাকা শিশু এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের যারা হাসপাতালের অভ্যন্তরে রয়েছেন’ তাদের সুরক্ষার বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
একইসঙ্গে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেছে সংস্থাটি।
এদিকে যোগাযোগ বিপর্যয় মানে গাজায় মৃতের সংখ্যা আর আপডেট না হওয়া বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, ‘গাজার উত্তরে অবস্থিত হাসপাতালগুলোতে পরিষেবা এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়’ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আহত ও নিহত মানুষের সর্বশেষ সংখ্যা আপডেট করতে বিলম্ব করছে।’
অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা তার সর্বশেষ আপডেটে জানিয়েছে, গত শুক্রবার দুপুর ২টায় গাজায় ১১ হাজার ৭৮ জনের মৃত্যুর তথ্য ছিল। নিহতদের মধ্যে ছিল ৪ হাজার ৫০৬ শিশু এবং ৩ হাজার ২৭ জন নারী।
জাতিসংঘ বলছে, ‘প্রায় দেড় হাজার শিশুসহ আরও প্রায় ২৭০০ জনের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে এবং তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে থাকতে পারে বা মারা যেতে পারে।’
ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৭ হাজার ৪৯০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় গড়ে প্রতি ১০ মিনিটে একটি করে শিশু নিহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি সতর্ক করে বলেছেন: ‘গাজায় কোনও জায়গাই নিরাপদ নয় এবং সেখানে কেউই নিরাপদে নেই।’
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদকে টেড্রোস বলেন, ‘গাজার হাসপাতালের করিডোর পর্যন্ত আহত, অসুস্থ, মৃত ব্যক্তিদের ভিড়ে ভরে গেছে। মর্গ উপচে পড়ছে। অ্যানেস্থেসিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ হাসপাতালে আশ্রয় নিচ্ছেন।’