• 10 Oct, 2024

*ছেঁড়াস্মৃতি*- আব্দুর রউফ মান্নান

*ছেঁড়াস্মৃতি*- আব্দুর রউফ মান্নান

*মহাদেবপুর স্কুল জীবনঃ* অনলাইন সংস্করণ – ০৭ (৪০ থেকে ৪৩ পৃষ্ঠা) মহাদেবপুর থানা পরিচিত ছিল রাজার থানা হিসেবেই।

রাজা নারায়ণচন্দ্র রায় বাহাদুরের রাজত্ব বিস্তৃত ছিল মহাদেবপুর থানাসহ নওগাঁর ৬/৭টি থানার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। এসব থানার অধিকাংশ জমি, শালবন, পুকুর-দীঘি সবই ছিল রাজকীয় সম্পত্তি। খাজনা আদায়ের জন্য ছিল পাইক-পেয়াদা, বরকন্দাজসহ নানা পদের কর্মচারি। রাজবাড়ির কাছেই ছিল বিশাল বিশাল কাচারি ঘর, যা কালের সাক্ষী হিসেবে আজো বিদ্যমান। রাজার এ সব কাচারি ঘর এখন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মহাদেবপুর বাজার অথবা বাজারের বাইরে যেখানেই পা রাখবেন সেখানেই আছে রাজা নারায়ণচন্দ্র রায় বাহাদুরের জমাজমি। আমি যখন মহাদেবপুর স্কুলে ভর্তি হই তখন ওই অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ ছিলেন সনাতন ধর্মের অনুসারী হিন্দু সম্প্রদায়ের। মুসলমানের মধ্যে অনেকেই ছিলেন অবস্থাশালী। এই অঞ্চলে সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট ছিল, এখনো আছে। অত্যন্ত প্রজাবৎসল এবং জনদরদী রাজা ছিলেন নারায়ণচন্দ্র রায় বাহাদুর। তাঁর জনহিতকর কাজের বহু নিদর্শন এখনো মহাদেবপুরের পথে-প্রান্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

মহাদেবপুর স্কুলে বন্ধু হিসেবে পেলাম বেলকুঁড়ি গ্রামের তোফাজ্জল চাচা, (বর্তমান বেলকুড়ি ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার) গোলাম রসুল বাবু, কালনা গ্রামের হামিদ, ও তার তিন ভাই এবং সিরাজ, কাজী মহসিন, বারেক, ভোলা ভাই, খালেদ, নারায়ণ, রেজাসহ অনেককেই। হোস্টেলের অদুরেই সানাউল্লাহ ভাইয়ের বাড়ি। তিনি আমার আইকন ছিলেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন বেশির ভাগই। যারা বেঁচে আছেন তাদের সঙ্গে কমবেশি যোগাযোগ আছে এখনো। কালনা গ্রামের হামিদসহ তারা তিন ভাই হোস্টেলে থাকতেন। বাবার ছিল অঢেল সম্পদ। তাদের চলাফেরায় রাজসিক ভাবসাব। এই ভ্রাতৃত্রয় ছিলেন অন্য ছাত্রদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

দেখতে দেখতে মহাদেবপুরে আমার দুই বছর কেটে গেল। স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি হয়েছে আমার। যারা তালপাতার সিপাই বলে ডাকতো, তারা হঠাৎ আমার স্বাস্থ্যের এই পরিবর্তন দেখে ওই নামে ডাকা বন্ধ করলেন। তবে খুব যে মোটা হয়েছিলাম তাও নয়, উচ্চতা বেড়েছিল বেশ। আমার দাদাও বেশ দীর্ঘদেহি মানুষ ছিলেন, ৬ ফুটের কাছাকাছি। বাবার সম্পর্কে এমনই শুনেছিলাম। অবশ্য আমার মা ছিলেন স্বাভাবিক গড়নের।

মহাদেবপুর হাই স্কুলে আমার নতুন জীবনের সূচনা হয়। চারপাশের সবকিছুই খুব ভালো লাগে এবং আমি তা উপভোগও করি। স্কুলের শিক্ষকদের ধারণা ছিল আমি বুঝি খুব বড়লোকের ছেলে। বাজার, থানা, হাটে-ঘাটের মানুষজন আমাকে খুবই স্নেহ করতো। বন্ধুদের মধ্যে একান্ত গোলাম রসুল বাবু। পোশাকে-পরিচ্ছদে খুব স্মার্ট। বাবুর বাবা ভারতে মারা যাওয়ার পর ওর মা বাবুসহ এদেশে চলে আসেন। বাবুর মাকে আমি খালাম্মা বলে ডাকতাম। শিক্ষিত মহিলা, আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আমি প্রায়ই বাবুদের বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করতাম। এই বাবুর সঙ্গে আজো আমার বন্ধুত্ব অটুট আছে। এছাড়া বেলকুড়ি গ্রামের তোফাজ্জল চাচার ক্লাসমেটের সঙ্গে প্রায় দিনই ফোনে কথা হয় এবং স্কুল জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করি।

স্কুলে বার্ষিক নাটক হতো। আমি অনেক নাটকে অভিনয় করেছি। হোস্টেলের সুপার আজিমুদ্দীন স্যার স্কুলের অদূরে থাকতেন। এখনও তিনি বেঁচে আছেন। কড়া নজরদারিতে রাখতেন আমাদের। আমার রুমমেট ছিল কালনা গ্রামের হামিদ, বিলশিকারী গ্রামের সিরাজ, তোফাজ্জল। আমরা দুষ্টুমি করতাম প্রচুর, বিশেষ করে বারিকের সাথে ঠাট্টা তামাশা করতাম বেশি। স্কুলের বড় ছুটিতেও আমরা ৮/১০ জন বাড়ি যেতাম না। নিজেরাই রান্না করে খেতাম। যদিও রান্না তেমন ভালো হতো না, তবে সেটাই আমাদের কাছে ছিল অমৃত সমান। রাস্তার ওপারে ছিল বিশাল ফুটবল মাঠ। বিকেলে হকি অথবা ফুটবল খেলতাম আমরা। ছুটি হলেও সব সময় বাড়ি যেতাম না। কালেভদ্রে বাড়ি গেলে দাদা খুব খুশি হতেন। কিন্তু সাংসারিক ঝামেলায় আমাকে বেশি সময় দিতে পারতেন না। আমি বাড়ি গেলেই মাছ, মাংস, পুলিপিঠা ও ভাপাপিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যেত ।

স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ইউনিফর্ম বা নির্ধারিত কোনো পোশাকের প্রচলন ছিল না। ফুলপ্যান্ট আর টি-শার্ট পরে স্কুলে যেতাম। মহাদেবপুর স্কুলে ভর্তি হয়ে সেই সময়ের নওগাঁর নামকরা ‘ফিটওয়েল টেইলার্স’ থেকে দু’টো ফুলপ্যান্ট ও দু’টো শার্ট বানিয়ে এনেছিলাম এবং নজিপুরের রফিকুল কাজীকেও আমার খরচে ঐ ধরনের জামা, প্যান্ট বানিয়ে দিয়েছিলাম। দাদা মাসের খরচ বাদে অতিরিক্ত টাকা পাঠাতেন। দই, মিষ্টি, পরোটা, দুধের সর খেতাম প্রচুর।

মহাদেবপুর খোকার রেস্টুরেন্টে দুধের সর পাওয়া যেত। তবে আমাকে টাকা পয়সা দিতে হতো না। দাদা মাস কাবারে আমার নাস্তা-পানি খাওয়ার বিল পরিশোধ করে দিতেন। মহাদেবপুরে দু’বছর থাকার পর মেট্রিক পরীক্ষা শেষ। তখন সব হাইস্কুলের মেট্রিক পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল নওগাঁ মহকুমা সদরে। পরীক্ষা শেষে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসি। অখণ্ড অবসর, আমার সেই সব অকৃত্রিম বন্ধুদের নিয়ে জম্পেস আড্ডায় মেতে উঠলাম। গ্রামের বন্ধুরাও মেট্রিক পরীক্ষা শেষে বাড়ি এসেছে। সে সময় মেট্রিক পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৩৫/৪০ শতাংশ। ৩য় বিভাগে মেট্রিক পাশ করি। দাদাকে পাশের খবর জানালাম। খবর শুনে মা খুব খুশি হলেন এবং আমাইপুকুরে আসলেন, কিন্তু ঢাকায় কোন কলেজে ভর্তি হতে নিষেধ করলেন। যেহেতু মেঝ বুবু ফিরোজা নওগাঁ মহকুমা শহর থাকে, তাই মা নওগাঁতেই ভর্তি হতে বললেন ।

*জগন্নাথ কলেজে ভর্তি ও নন্দলাল দত্ত লেনের মেস জীবন*

আমি কারো কথা না শুনে মহাদেবপুরের জোয়ানপুর গ্রামের মোখলেছুর মাস্টারের সঙ্গে পরামর্শ করে ঢাকা যাই। জীবনে প্রথম ঢাকা শহরে এলাম ১৯৬৬ সালে, ট্রেনে। আমরা দু’জন ঢাকার নবাবপুর রোডের সোলেজা বোর্ডিং-এ উঠলাম। হোটেলটির মালিক ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। পরদিন সকালে জগন্নাথ কলেজে যাই। জগন্নাথ কলেজ বর্তমানে একটি নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বেশ সহজেই এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে (আইএ) ভর্তি হলাম। ১৯৬৬ সাল। বিশাল কলেজ, প্রায় ১৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রী, ৩ শতাধিক শিক্ষক বা প্রফেসর। কলেজে পাঁচতলা দালান ও বিশাল স্থাপত্য দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেলাম ।

ভর্তি হলাম ঠিকই। কিন্তু থাকার ব্যবস্থা নেই, মোখলেছুর মাস্টার আমার জন্য ছাত্রাবাস অথবা মেসে সিট খুঁজতে শুরু করে দিলেন। কিন্তু কিছুতেই কাজ হলো না। নবাবপুরের সোলেজা বোর্ডিং থেকেই ক্লাস করা শুরু করি। ক্লাসে নিজেকে বড় একা মনে হতো। মন-মেজাজও খুব খারাপ যাচ্ছিল। ভাবছিলাম, কী দরকার ছিল- এতদূরে এসে ভর্তি হওয়ার? ঢাকা তখন পূর্বপাকিস্তানের রাজধানী শহর। সে সময় পুরনো ঢাকায় উর্দূ ভাষার বেশ প্রচলন ছিল। হোটেল, রেঁস্তোরা, দোকান-পাট সবই ছিল উর্দুভাষীদের দখলে। দোকানে কোনো কিছু কিনতে গেলেই উর্দূ কথা শুনতে হতো। আমিও ভাঙ্গা ভাঙ্গা উর্দূ বলতে চেষ্টা করি। আমরা উর্দুভাষীদের বিহারী নামে চিনতাম । দেশ ভাগ হওয়ার সময় ১৯৪৭ এবং ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর ভারতের বিহার রাজ্য থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ রিফিউজি বা শরণার্থী হিসেবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। করাচি, বেলুচিস্থান, পেশোয়ার, পাঞ্জাব থেকেও বহু মানুষ ব্যবসার জন্য পূর্ব পাকিস্তানে আসে। এরা ব্যবসায় খুব পাকা ছিল। পরে এদের অনেকেই এ দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, জগন্নাথ কলেজটি ১৮৫৮ সালে প্রাথমিকভাবে ব্রাহ্মস্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭২ সালে বালিয়াটির জমিদার কিশোরী লাল রায় তাঁর পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে এই বিদ্যাপিঠের নামকরণ করেন। ১৮৮৪ সালে এটি দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ এবং ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণির কলেজে পরিণত হয়। এই সময়ে জগন্নাথ কলেজ উচ্চশিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান ছিল। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কার্যক্রম বন্ধ করে এটিকে ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনমিত করা হয়। কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র এবং শিক্ষকদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। জগন্নাথ কলেজ গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বইপুস্তক ও জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৪২ সালে এই কলেজে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা আবার বন্ধ করে দেয়া হয়। ১৯৪৯ সালে স্নাতক পাঠ্যক্রম আবার চালু হয়। ১৯৬৩ সালে পুনরায় সহশিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৮ সালে কলেজটি সরকারিকরণ হলেও ১৯৬৯ সালে আবার বেসরকারিকরণ করা হয়। ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয় ।

আমি আর মোখলেছুর মাস্টার প্রায় ১৮ দিন ওই সোলেজা হোটেলে থাকি। হোটেলে থাকা এবং খাওয়ার খরচ অনেক বেশি ছিল। একদিন কলেজের নোটিশ বোর্ডে একটা মেসের ঠিকানা পাই। ১৬ নম্বর নন্দলাল দত্ত লেন, তিনতলা বাড়ি জুড়ে ছাত্র মেস। মেসের কেয়ারটেকার কলিমুল্লাহ সরকার। তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সবেমাত্র বিয়ে করেছেন। পরিচয় দিতেই আমার প্রতি বেশ দয়া পরবস হয়ে বললেন আজই আমার এখানে ওঠেন। আমি দেরি না করে হোটেল থেকে ব্যাগ ও বেডিংপত্রসহ মোখলেছুর মাস্টারকে নিয়ে নন্দলাল দত্ত লেনের সে মেসে এসে উঠলাম। মোখলেছুর মাস্টার ওই দিনই রাতের ট্রেনে মহাদেবপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করলেন। থাকার ব্যবস্থা হওয়ায় আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম এবার মন-মেজাজ বেশ ফুরফুরে হলো।

মেসে প্রায় ৫০/৬০ জন ছাত্র, চাকরিজীবীও আছেন কয়েকজন। খাওয়া এবং সিট ভাড়ার টাকা কেয়ারটেকার কলিমুল্লা ভাইয়ের হাতে দিতে হয় প্রতিমাসে। তিনতলার পুরোটা জুড়েই মেস। বাবুর্চি আমির আলীসহ তিনজন বয়। ডাইনিং রুম নাই, বয় খাবার দিয়ে যেত রুমে। চমৎকার রান্না, খাবার মানও খুব ভালো। আমি আর বাড়ি না গিয়ে দাদার কাছে ভর্তির খবর জানিয়ে টাকা চেয়ে চিঠি পাঠালাম ।

অল্প সময়ের মধ্যে ছাত্র ও চাকরিজীবী মেস মেম্বারদের অনেকের সঙ্গেই আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেল। রাজশাহী জেলার লোকদের অন্য এলাকার মানুষ খুব পছন্দ করতো, ভালোবাসতো। এর অনেক কারণও ছিল, যেমন রাজশাহী অঞ্চলের বা নর্থবেঙ্গলের মানুষজন সহজ-সরল এবং অনেকেই বেশ অবস্থাসম্পন্ন পরিবার থেকে আসা। ওখানে আম, লিচু হয় প্রচুর এবং ধান বা চালের এলাকা হিসেবেও পরিচিত। এক কথায় বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার রাজশাহী অঞ্চল। আমাদের মেস থেকে পায়ে হেঁটে জগন্নাথ কলেজে যেতে সময় লাগতো বিশ/পঁচিশ মিনিট। আমার কলেজ জীবনের শুরুটা বেশ ভালোভাবেই কাটছিল। মাঝে মাঝে খুব মনে পড়তো ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। সেই আমার জন্মস্থান আমাইপুকুর, এক ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়। আমার প্রিয় গ্রাম। ছেলেবেলার বন্ধু-বান্ধব, মা, দাদা-দাদিসহ আত্মীয়-স্বজনকে ছেড়ে প্রথম নজিপুরে আসার কথা আমার মানসপটে এখনো ছবির মতো ভেসে ওঠে। নজিপুর স্কুল থেকে মহাদেবপুর স্কুলে আসা, এ সব স্মৃতি মাঝে মাঝে আমাকে আনমনা করে দিত। গ্রাম থেকে ঢাকায় আসা ১৫/১৬ বছরের এক তরুণের জীবনে এ এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। মাঝে মাঝে নিজেকে খুব একা মনে হতো।

মেস জীবনে খেলাধুলা বা চিত্তবিনোদনের কোনো সুযোগ ছিল না। আর আমি তো কলেজে সবেমাত্র ভর্তি হয়েছি, কলেজে ফুটবল মাঠ নেই, নেই কোনো সুপরিচিত বন্ধু। মেস থেকে কলেজ আর কলেজ থেকে মেস- এই আমার চলাচলের গণ্ডি। ক্লাস শেষে মেসে এসে খাওয়ার পর ঘুম। সারা বিকেল অবসর, কোনো কাজ নেই। অবশ্য বেড়ানোর জায়গা যে ছিল না তাও নয়। তবে ঢাকায় প্রথম এবং নতুন হওয়ায় সবকিছু তখনো বুঝে উঠতে পারিনি। আমার আর মেসে থাকতে মন চাইতো না। এক সময় কলেজ ছাত্র লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেয়া শুরু করলাম। তখন সব আন্দোলনের সূতিকাগার ছিল জগন্নাথ কলেজ যা আজকের জগন্নাথ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ।

চলমান …………………..

(গল্পটি ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করুন)