• 28 Apr, 2024

বিধি ভঙ্গ করে নৌকার প্রচারণায়, যুগ্মসচিব কিবরিয়াকে শোকজ

বিধি ভঙ্গ করে নৌকার প্রচারণায়, যুগ্মসচিব কিবরিয়াকে শোকজ

সরকারি চাকরির বিধি ভঙ্গ করে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়েছেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্মসচিব একেএম জি কিবরিয়া মজুমদার।

 এ ঘটনায় ওই যুগ্মসচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী জজ সাইফুর রহমান।

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয় উপজেলার পায়েরখোলা এলাকায়। ওই সভায় অংশ নেন যুগ্মসচিব কিবরিয়া। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে শোকজ দেয় নির্বাচনী তদন্ত কমিটি।

যুগ্মসচিব একেএম জি কিবরিয়ার বাড়ি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদিঘি ইউনিয়নের কোরকরা এলাকায়। তার দাবি, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাকে মঞ্চে বসানো হয়।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদিঘি ইউনিয়নের পায়েরখোলা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন যুগ্মসচিব কিবরিয়া। তিনি আগেও বেশ কয়েকটি সভায় প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ১৯৭৯-এর রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ অংশে বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গ সংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।

এ বিষয়ে একেএম জি কিবরিয়া মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাড়ি ওই এলাকায়। নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে আমাকে নির্বাচনী সমাবেশের মঞ্চে বসানো হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে কিবরিয়াকে দেওয়া শোকজ নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা কুমিল্লার মাধ্যমে কুমিল্লা-১১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান আপনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়েরপূর্বক দাবি করেন, আপনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা হয়েও ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ২৫ ডিসেম্বর জগন্নাথদিঘী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত পায়েরখোলা এলাকার নির্বাচনী সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য দেন এবং আপনার অধীন কর্মচারী মো. আবুল কাশেমের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনপূর্বক চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নৌকা প্রার্থী মো. মুজিবুল হকের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও নৌকা মার্কায় ভোট চান।

এতে আরও বলা হয়, এ সংক্রান্ত সংবাদ ২৬ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে প্রচার হয়, যার ভিডিও ক্লিপ ও স্থিরচিত্র অনুসন্ধান কমিটির কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, যাতে আপনার সরব উপস্থিতি পরিলক্ষিত করা যাচ্ছে। ওই কার্যাবলীর মাধ্যমে আপনি ‘সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮’ এর ১৪(১)(২) এর বিধি লঙ্ঘন করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ অবস্থায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে কেন আপনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ করা হবে না, সে বিষয়র আগামী ১ জানুয়ারি বেলা ১১টায় নির্বাচনী তদন্ত কমিটির কার্যালয়ে সশরীরে অথবা উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

এসআর/আরিফ আজগর/এসএসএইচ