এদিকে ব্রয়লারের পাশাপাশি স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের সেই বাড়তি দামেই। এই অবস্থায় বাজারে ক্রেতাদের অসন্তোষ থাকলেও বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় মাছ-মাংসে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানী রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে মাছ-মাংসের দামের এসব চিত্র দেখা গেছে।
আজকের বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১০৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি বড় রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ছোট ও মাঝারি আকৃতির রুই ৩০০ টাকার কিছু কম-বেশি, কাতল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে অস্থির ইলিশের বাজারও। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩২০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকা দরে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুণতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত।
মাহমুদা খানম নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে এমনিতেই সব জিনিসের দাম বেশি। এরমধ্যে নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। মাছের দামও গত সপ্তাহের তুলনায় বাড়তি মনে হলো। যার যখন ইচ্ছে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কেউ বাজার মনিটরিং করে বলে মনে হয় না।
বাজার করতে আসা আরিফুল ইসলাম নামে আরেক বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় আজকের বাজারে মুরগি দামটা একটু বেশি। আজকে ব্রয়লার কিনতে হয়েছে ২১০ টাকায়।
তিনি বলেন, একটা সময় প্রতি সপ্তাহে একদিন গরুর মাংস খাওয়া হতো। এখন গরুর মাংসের জায়গা দখল করেছে মুরগির মাংস। গরুর মাংস এখন কিনতে গেলেও বারবার হিসাব করতে হয়। মুরগির দাম কম থাকাটা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির জায়গা। তবে এর দামটা আরও কম হওয়া উচিত।
এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত মাছ না আসায় দাম বাড়ছে। ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় বাইরে চলে যাচ্ছে।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, ইলিশ কম ধরা পড়ছে। এতে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। দিন দিন ইলিশের দাম ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে কমছে বিক্রিও।
মুরগির মাংস বিক্রেতা মনসুর আলী বলেন, বাজারে মুরগির চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। সে তুলনায় দামটা কমই বলা যায়। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লারের দামটা কিছুটা বেড়েছে। সম্ভবত শীতের কারণে বেড়েছে। এই সময়ে শীতে কিছু মুরগি মরে যায় এবং রোগবালাইও বেশি হয়। যে কারণে খামারি পর্যায়েই বেশি দামে কিনে আনতে হয়। তবুও আলহামদুলিল্লাহ, ভালো বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস বিক্রেতা শান্ত ইসলাম বলেন, এখন খামারিরা গরু কম ছাড়ছে। সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে তারা গরু তৈরি করছে। যে কারণে এখন যেগুলোও বিক্রি হচ্ছে দাম তুলনামূলক একটু বেশি দামে। তাই মাংসের বাজারেও তার প্রভাবটা পড়েছে। গরুর মাংস মোটামুটি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকার মধ্যেই আটকে আছে। আর কমবে বলে মনে হয় না।