এই ঘটনার জেরে মণিপুরের পাঁচ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক করেন। সোমবার (১ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বছরের প্রথম দিনে মণিপুরে নতুন করে সহিংসতায় চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
থাউবাল জেলার স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, একদল পুরুষ চাঁদাবাজির জন্য স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে সেখানে এসেছিল। যদিও তাদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। তবে হামলার ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বন্দুকধারীদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘দলটি বন্দুক নিয়ে এখানে এসেছিল এবং একজন লোকের সাথে কথা বলার সময় - যাকে তারা চেনে বলে মনে হয় - মারামারি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সবাইকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে।’
এদিকে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ভিডিও বার্তায় সহিংসতার নিন্দা করেছেন এবং জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার ঘটনায় আমি আমার অপরিসীম দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা অপরাধীদের ধরতে পুলিশের দলগুলোকে একত্রিত করেছি। আমি হাত জোড় করে লিলং (যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে) বাসিন্দাদের কাছে অপরাধীদের খুঁজে বের করতে সরকারকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- সরকার আইনের অধীনে ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য তার ক্ষমতার সব কিছু করবে।’
এছাড়া সহিংসতার ঘটনার পর সমস্ত মন্ত্রী এবং শাসক দলের বিধায়কদের নিয়ে জরুরি বৈঠকও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। এনডিটিভি বলছে, নতুন করে হওয়া এই সহিংসতার পরে থাউবাল, ইম্ফল পূর্ব ও ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলায় পুনরায় কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দুই দিন আগে মণিপুরের সীমান্ত শহর মোরেহতে সন্দেহভাজন বিদ্রোহী এবং পুলিশ কমান্ডোদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্য আহত হয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা বেশ কয়েকটি আরপিজি নিক্ষেপ করে যা মোরেহের তুরেলওয়াংমা লেইকাইয়ের সিডিও ফাঁড়ি ভবনের ভেতরে বিস্ফোরিত হয়। আর সেখানেই কমান্ডোরা অবস্থান করছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মণিপুরে গত বছরের মে মাসে ভয়াবহ জাতিগত সংঘাত শুরু হয়। এরপর থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি বছরের বেশিরভাগ সময় ধরেই সংবাদের শিরোনামে ছিল।
সংঘাতে রাজ্যটিতে ১৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং ঘরবাড়ি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।
টিএম