বেইলি রোডের দোকানিরা বলছেন, আগুনের ঘটনার পর রাজউক, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা বেইলি রোডে অবস্থিত রেস্তোরাঁগুলোয় অভিযান পরিচালনা করে। এর মধ্যে নবাবী ভোজকে সিলগালা করে দেওয়া হয়। আর বেশ কয়েকটিকে জরিমানা করা হয়। ফলে, বর্তমানে এই এলাকার অধিকাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। যেগুলো খোলা আছে, তারাও ভ্রাম্যমাণ আদালতেরও অভিযানে ভয়ে ইফতারের আয়োজন রাখেনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নবাবী ভোজ ছাড়াও বেইলি রোড এলাকায় সুলতান ডাইন, ওয়েসিস, চিলক্সসহ একাধিক রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। আর যেসব রেস্তোরাঁ ও ফাস্টফুড রেস্টুরেন্টে খোলা আছে তারা এবার ইফতারের আয়োজন করেনি।
এবার বেইলি রোডের সবচেয়ে বড় ইফতারে বাজার জ্যাগেরি রেস্তোরাঁ ও পিঠা ঘর এবং ক্যাপিটাল ইফতার বাজার। এখানে শতাধিক ইফতারের আইটেম দেখা গেছে। তার মধ্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ছোলা, বুট থেকে শুরু করে মগজ ভুনা, খাসির হালিম, গরুর চপ, গরুর শামী কাবাব, মাটন লেগ রোস্ট, জালি কাবাব, শিক কাবাব, রেশমি কাবাব, সুতি কাবাব, ভেজিটেবল রোল, স্প্রিং রোল, বাসমতির জর্দা, চাটনি, পনির সমুচা, নিমকি পোড়া, বুন্দিয়া, হালিম, দই বড়া, কিমা পরোটা, কাশ্মীরি পরোটাসহ হরেক রকমের জিলাপি পাওয়া যাচ্ছে। কাবাব আইটেমের পাশাপাশি পিটার আইটেমও বিক্রি হচ্ছে। এক-একটি ইফতারের আইটেম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১৫০০ টাকায়।
জ্যাগেরি রেস্তোরাঁ ও পিঠা ঘরের মালিক মো. রাকিব বলেন, ইফতারের বাজারে জন্য ঐতিহ্যবাহী জায়গা হচ্ছে বেইলি রোড। কিন্তু ২৯ তারিখে অগ্নিকাণ্ডের পর অনেক রেস্তোরাঁ অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সঠিক না থাকার কারণে বন্ধ রয়েছে। যার ফলে, এবার বেইলি রোডে আমাদের রেস্তোরাঁ ছাড়া অন্য কোথাও ইফতারের জমজমাট আয়োজন নেই।
ক্যাপিটাল ইফতার বাজারের বিক্রয় কর্মী লিটন বলেন, দাম বেড়েছে অনেক জিনিসের, তাই অনেক আইটেম বাদ দিতে হয়েছে। গত বছর আমাদের ২০০ শতাধিক ইফতারের আইটেম ছিল। এবার ৭০-৮০টি আইটেম আছে। তবে, এটা সামনের দিনে বাড়বে।
সুইস বেকারি কাউন্টার ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম বলেন, সবার ভেতরে আতঙ্ক থাকার কারণে ক্রেতারা এবার বেইলি রোড়ে আসছে না। আমরা নিয়মিত আয়োজন বাইরে এবার বাড়তি কোনো ইফতারের আইটেম করিনি।
এদিকে বেইলি রোডের রস সুইটসে গিয়ে দেখা যায়, জিলাপির জন্য ক্রেতাদের লম্বা লাইন। পাশাপাশি কেউ-কেউ মিষ্টিও কিনছেন।
বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আহমেদ জুবায়ের বলেন, আজকে প্রথম রোজা। বাসার সবাই একসঙ্গে ইফতার করব। তাই এখানে এসেছিলাম ইফতার কিনতে। কিন্তু কয়েকটি দোকান ছাড়া, এবার এখানকার সব দোকানই বন্ধ বা ইফতারের আয়োজন করেনি। তাই অল্প কিছু ইফতার কিনে ফিরতে হচ্ছে।