এরপর কোমলমতি ছেলেরা আমাদেরকে স্বাধীনভাবে চলার, মুক্তভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, তারা যে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিল, তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আর কোনো দখলদার, চাঁদাবাজ, লুটেরাদের ঠাঁই দেব না। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিগত সময়ে পুলিশ রাজনৈতিক যে লেজুড়বৃত্তি নিয়ে কাজ করেছে বর্তমান সরকার পুলিশকে সেভাবে ব্যবহার করবে না। পুলিশ জনগণের সেবায় কাজ করবে। পুলিশ নতুন উদ্যোমে কাজ করবে। আপনারা ঘুমাবেন, পুলিশ পাহারা দেবে। কোনো জায়গায় পুলিশের চাঁদাবাজি হবে না। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই- পুলিশের কোনো চাঁদাবাজির তথ্য থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি সাথে সাথেই ব্যবস্থা নেব। পুলিশ চাঁদাবাজি করতে পারে না, পুলিশ জনগণনের সেবক, পুলিশ নিজেই চাঁদাবাজ হলে তাহলে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেবে। পুলিশ কোনো চাঁদাবাজের পক্ষ নেবে না এবং চাঁদাবাজি করবে না। ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ পুলিশ মুখ থুবড়ে পড়েছিল। সকলের প্রচেষ্টায় পুলিশ ঘুরে দাড়াচ্ছে।মাদকের বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিশ মুক্তভাবে চলাফেরা করবে। তারা আগের মতো চাঁদাবাজ হবে না, দখলদার হবে না, আগের মতো অনৈতিক কাজে জড়িত হবে না। কোনো পুলিশ মাদকের সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে সমাজের কিছু ব্যক্তি ছিলেন, যারা আপনাদের সমাজের অংশ, যারা এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা করেছিল, তাদের কেউ রেহাই পাবে না। কোনোভাবেই ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই। তারা আমাদের নিজেদের শত্রু না, তারা স্বাধীনতার শত্রু, তারা আমাদের মুক্তভাবে কথা বলতে দেয়নি, লিখতে দেয়নি, তাদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবেনা।
তিনি বলেন, কিছু সাংবাদিককে মানুষ জাতির বিবেক মনে করতো। তারা ছাত্রদেরকে হত্যা করার জন্য উৎসাহ দিয়েছে। আর এমন সাংবাদিক ছিলেন যারা ছাত্রদের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য পাশে থেকেছিলেন। সব জায়গায় দুর্বৃত্তায়ন সব সময় ছিল। সেই একটা ঘোলাটে পরিবেশ ছিল, এটা থেকে আমরা রেহাই পেয়েছি। যে সমস্ত সেবা ধর্মী জায়গায় বৈষম্য আছে সেগুলো কিছু ব্যক্তি, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দলের পকেটে ছিল। সেই বৈষম্য দূর করব।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজার জেলায় ১৯টি মামলা হয়েছে। এই মামলায় ১২ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সুদর্শন কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহসিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সারোআর আলমসহ মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।