সৈয়দ সম্রাট আলী, বিশেষ প্রতিনিধ, সাপ্তাহিক নড়াইলকণ্ঠ ॥ “বাংলাদেশের কুরিয়ার সার্ভিস খাতে নির্ভরযোগ্য নাম হিসেবে ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লিমিটেড। রংপুরের তরুণ উদ্যোক্তা কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়নের হাতে শুরু হওয়া এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ছিল-দেশের প্রতিটি প্রান্তে দ্রুত, নিরাপদ ও বিশ্বস্ত ডেলিভারি পৌঁছে দেওয়া। প্রতিষ্ঠার ০৯ বছরের মাথায় সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে, সারা দেশের মতো নড়াইলেও প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে বিশ্বাস ও কর্মসংস্থানের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।”
রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় জন্ম নেওয়া কে এম রিদওয়ানুল বারী জিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পথে না গিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বেছে নেন। সেই স্বপ্ন থেকেই ২০১৬ সালে ‘স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লিমিটেড’-এর যাত্রা শুরু। মাত্র ০৯ বছরে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিজস্ব নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে।
নড়াইল জেলা অফিসের সূচনা ও সম্প্রসারণ
নড়াইল জেলায় স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লিমিটেড এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০২০ সালের ২০ জুলাই। প্রথম দিকে জেলা শহরে একাই সেবা দিতে হতো বর্তমান জেলা ম্যানেজার মো. রিয়াজুল ইসলামকে। তিনি নিজেই পণ্য গ্রাহকের বাড়ী গিয়ে হাতে হাতে পৌঁছে দিতেন। বর্তমানে চার বছরের ব্যবধানে নড়াইল জেলায় প্রতিষ্ঠানটির চারটি শাখা অফিস গড়ে উঠেছে-নড়াইল শহরের আলাদাতপুর, লোহাগড়া, কালিয়া ও নড়াগাতী এলাকায়।
২০২২ সালের মে মাস থেকে নড়াইল জেলা শহরের আলাদাতপুরে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পশ্চিম পাশের সড়কে জেলা অফিস থেকে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। জেলা শাখায় এখন ২৪ জন রাইডার নিয়োজিত আছেন, যারা প্রতিটি ইউনিয়নে ঘরে ঘরে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে।
সেবা ও চার্জ কাঠামো
নড়াইল জেলা ম্যানেজার মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লিমিটেড মূলত অনলাইনভিত্তিক কুরিয়ার সার্ভিস হিসেবে কাজ করে। তিনি আরো জানান, এ অফিসে প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ শত গ্রাহকের পণ্য আসে, যা যাচাই-বাছাই করে এলাকা অনুযায়ী রাইডারদের মাধ্যমে গ্রাহকের নিকট পণ্য পৌঁছানো হয়। তিনি আরো জানান, এই কুরিয়ার অন্যান্য সেবার মধ্যে রয়েছে: যেমন-পার্সেলের পাঠানেরা জন্য ন্যূনতম চার্জ নেয়া হয় ১১০ টাকা, বই-পুস্তকের জন্য ৯০ টাকা এবং ডকুমেন্ট (চিঠিপত্র) পাঠাতে নেওয়া হয় ৫০ টাকা।
কর্মসংস্থানের সুযোগ
নড়াইল শাখায় কর্মরত একাধিক রাইডার (ডেলিভারি ম্যান) জানান, “আমরা আগে বেকার ছিলাম। স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের সাথে যুক্ত হওয়ার পর আমাদের জীবনে স্বস্থি এসেছে। এখন আমরা পরিবার নিয়ে ভালোভাবে বাঁচতে পারছি। অফিসের কর্মকর্তারা আমাদের সম্মান ও ভালোবাসা দিয়ে কাজ করতে অনুপ্রাণিত যুগিয়ে থাকেন।”
গ্রাহকদের সন্তুষ্টি
অফিসে আসা একাধিক গ্রাহক “সাপ্তাহিক নড়াইলকণ্ঠ”কে জানান, “স্টেডফাস্ট কুরিয়ার” অনলাইন পণ্য পৌঁছে দেয় দ্রুত ও নিরাপদভাবে। ডেলিভারি ম্যান থেকে শুরু করে অফিস কর্মীরা সবাই ভদ্র ও সহযোগিতার মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি। আমরা তাদের সেবায় খুবই সন্তুষ্ট।”
স্টেডফাস্ট কুরিয়ার লি: নড়াইল ও মাগুরার জোনাল ম্যানেজার মো. তারিকুজ্জামান তোহা জানান, নড়াইলসহ আশপাশের জেলায় অনলাইন বেচাকেনার অধিকাংশ পণ্য স্টেডফাস্ট কুরিয়ার মাধ্যমেই পৌঁছে যাচ্ছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, “ছোটখাটো কিছু অভিযোগ এলে আমরা তা গ্রাহকদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করি। বড় ধরনের তেমন কোনো সমস্যা বা অনিয়মের অভিযোগ আমাদের এই অঞ্চলে নেই।”
নড়াইলের মতো জেলা পর্যায়ের ছোট শহরে স্টেডফাস্ট কুরিয়ারের এই সাফল্য প্রমাণ করে-দক্ষ ব্যবস্থাপনা, গ্রাহকবান্ধব সেবা ও প্রযুক্তিনির্ভর কাঠামোই আজকের বাংলাদেশের কুরিয়ার খাতের পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি।