• 30 Sep, 2025

শিমুলের বিদেশযাত্রা এখন দুঃস্বপ্ন, সৌদিতে পালিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছেন, নড়াইলে দুশ্চিন্তায় পরিবার!

শিমুলের বিদেশযাত্রা এখন দুঃস্বপ্ন, সৌদিতে পালিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছেন, নড়াইলে দুশ্চিন্তায় পরিবার!

নড়াইলকণ্ঠ: ভিনদেশে গিয়ে ভালো চাকরি করে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরানোর স্বপ্ন ছিল শিমুল শেখের। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন পরিণত হয়েছে চরম দুঃস্বপ্নে। সৌদি আরবে কাজের নামে প্রতারণার শিকার হয়ে বর্তমানে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। তার এই দুর্দশায় শোকাকুল ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী গ্রামের তার পরিবার।

সম্প্রতি শিমুলের পরিবার সদস্যরা বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে ভিডিও কলে তার সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। পাশে খেলা করছিল শিমুলের দুটি ছোট সন্তান। প্রবাসী ছেলের কষ্টের কথা শুনে শিমুলের বাবা জাফর শেখ, মা পারভীন বেগম ও স্ত্রী রাণী বেগমের চোখে জল এসে পড়ে।

পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় খাইরুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তি তাদের প্রলোভন দেখান—তাদের মাধ্যমে শিমুল সৌদি আরবে গেলে ভালো চাকরি এবং বৈধ কাগজপত্র (আকামা) পাবে। এর বিনিময়ে তারা দাবি করে ৫ লাখ টাকা। এই টাকা জোগাড় করতে গিয়ে শিমুলের পরিবার মোটরসাইকেল বিক্রি, জমি বন্ধক এবং ঋণ করতে বাধ্য হয়। এরপর চলতি বছরের মে মাসে সৌদি আরবে যান শিমুল।

কিন্তু সেখানে গিয়ে প্রতিশ্রুত কাজ বা আকামা কিছুই পাননি তিনি। উল্টো আরও টাকা দাবি করে প্রতারকরা। টাকা দিতে না পারায় তার বৈধ আকামা করা হয়নি। ফলে অবৈধ অবস্থায় থাকতে গিয়ে এখন পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে শিমুলকে।

ভিডিও কলে শিমুল বলেন,"ওরা বলছিল গাড়ি চালানোর কাজ দিবে, মাসে ৭০-৮০ হাজার টাকা বেতন। আমি গাড়ি চালানো শিখেছি। কিন্তু ওরা পরে লাইসেন্স করানোর জন্য আরও দেড় লাখ টাকা চায়। এখন আমি কাজ ছাড়াই পালিয়ে বেড়াচ্ছি, ঠিকমতো খেতেও পারছি না।"

শিমুলের মা বলেন,"আরও টাকা না দেওয়ায় আমার ছেলেকে আটকে রেখেছিল। একবার অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে বলা হয়—টাকা না দিলে বিপদ হবে। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যায় আমার ছেলে। এখন সে পুলিশের ভয়ে বনজঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।"

পরিবার অভিযোগের কোনো সমাধান না পেয়ে গত ২২ অক্টোবর আদালতে মামলা করেছেন শিমুলের মা পারভীন বেগম। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর শাখায় তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পিবিআই-এর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মহিদুল ইসলাম জানান,"

তদন্ত চলছে, এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।"

অন্যদিকে, অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,

“চুক্তি অনুযায়ী তাকে গাড়ি চালানোর কাজ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সে কাজ পারেনি। পরে অন্য কোম্পানিতে কাজ দেওয়া হয়েছে এবং আকামাও করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে টাকা চাওয়ার বা হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।”