• 19 May, 2024

এবছর সেপ্টেম্বরে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে রেল চলাচল উন্মুক্ত হবে -রেলমন্ত্রী

এবছর সেপ্টেম্বরে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে রেল চলাচল উন্মুক্ত হবে -রেলমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নড়াইল ও গোপালগঞ্জের ‘সীমান্তবর্তী’ মধুমতি নদীর উপর নির্মিতব্য রেলসেতু প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এবছর সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে রেল চলাচল উন্মুক্ত করা হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী।

শনিবার (১০ জুন) নড়াইলের লোহগড়া প্রান্তে প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি এই রেলসেতু পরিদর্শন করেন। রেলসেতু পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী নড়াইলে মধুমতি আর্মি ক্যাম্পে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে মধুমতি আর্মি ক্যাম্পের কোরিডোরে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সাংবদিকদের প্রেসব্রিফংএ করেন।

এ সময় রেলমন্ত্রী সাংবাদিদের বলেন, ‘এই প্রকল্পটি ২টি অংশে ভাগ করা হয়েছে। একটি ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এবং অন্যটি ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত। আমরা একটু গুরুত্ব দিয়েছি প্রথম ভাগের উপর। যেহেতু ঢাকা থেকে ভাঙ্গার সঙ্গে ফরিদপুর দিক থেকে একটা লাইন আছে, সেই লাইনের সাথে আমরা যুক্ত হতে পারি তাহ’লে একটু আগেই আমরা পদ্মা সেতুকে ব্যবহার করে আমরা রের চলাচলের জন্য করতে পারি সেই চিন্তা করেই আমি আজকে অগ্রগতি দেখার জন্য এসেছি।’

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি আগামি সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল যোগাযোগের জন্য এ অংশটি আমরা উন্মুক্ত করে দিতে পারবো।’

মন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে মধুমতি রেল সেতুর ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে এবং বর্তমানে রেলওয়ে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ।  প্রকল্পটি ২০১৮ সালে জুলাই মাসে শুরু হয় এবং ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে সমাপ্ত হবে।  

এ সময় প্রকল্পের প্রধান সমন্বয় মেজর জেনারেল এ কে এম রেজাউল মজিদ এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, ভারপ্রাপ্ত উপ প্রধান সমন্বয়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ এনডিসি, পিএসসি, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: শামছুল আলম পিএসসি, প্রকল্প পরিচালক মো: আফজাল হোসেন, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্প সূত্র মতে , পদ্মা বহুমুখী সেতুর ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটারসহ মোট ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্প ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। প্রকল্প সমাপ্তির পর জাতীয় অর্থনীতিতে আনুমানিক ১.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটবে বলে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ প্রকল্পের সুপারভিশন এবং পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছে।

নতুন ব্রডগেজ রেললাইনটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কেরানীগঞ্জ, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা সেতু, জাজিরা, ভাঙ্গা, কাশিয়ানী, নড়াইল, জামদিয়া পর্যন্ত যাওয়ার পর এর একটি শাখা যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত, অন্যটি খুলনার সিংগিয়া রেলস্টেশনে যুক্ত হবে।

সরকারের জি টু জি প্রকল্পের আওতায় চীনের এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে রেল মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পে ‘চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কর্মরত রয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

প্রকল্পে ১৭২ কি. মি. রেলপথে মোট ৫৯টি রেলসেতু, ১২৪টি কালভার্ট ও ১৩২ টি আন্ডারপাসসহ মোট ২০টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ।