• 28 Mar, 2024

ভাষাশহীদদের স্মরণে নড়াইলে লাখো মঙ্গল প্রদীপ

ভাষাশহীদদের স্মরণে নড়াইলে লাখো মঙ্গল প্রদীপ

অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই স্লোগান নিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলে ভাষাশহীদদের স্মরণে জ্বালানো হয়েছে লাখো মঙ্গল প্রদীপ ও মোমবাতি।

অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ এই স্লোগান নিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলে ভাষাশহীদদের স্মরণে জ্বালানো হয়েছে লাখো মঙ্গল প্রদীপ  মোমবাতি।

মঙ্গলবার(২১ ফেব্রুয়ারিসন্ধ্যায় নড়াইল একুশের আলো সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে ভাষাশহীদদের স্মরণে  আয়োজন করা হয়।

সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাবিবুর রহমান মোমবাতি জ্বালিয়ে লাখো মঙ্গল প্রদীপ  মোমবাতি প্রজ্জ্বলন উদ্বোধন করেন।

শহীদ মিনারজাতীয় স্মৃতিসৌধবাংলা বর্ণমালাআল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৭২তম বার্ষিকীতে ৭২টি ফানুষ ওড়ানো হয়।

সন্ধ্যায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীদের আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারিআমি কি ভুলিতে পারি এই গান পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শুরু হয়।

 

 সময় পুলিশ সুপার মোসাসাদিরা খাতুননড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোরবিউল ইসলামপৌর মেয়র আনজুমান আরাএকুশের আলোনড়াইল এর সহ-সভাপতি অ্যাডওমর ফারুকসাধারণ সম্পাদক কচি খন্দকারনড়াইল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মলয়কুমার কুণ্ডুসদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসিমাহমুদুর রহমানসংসদ সদস্য মাশরাফির বাবা গোলাম মর্তুজা স্বপনসহ নড়াইলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

নড়াইলের ২৬ বছরের এই আয়োজন দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।

বাবা-মায়ের সঙ্গে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন দেখতে আসা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ইউশা  বলেনভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। আগে কখনো একসঙ্গে এতো মোমবাতি জ্বলতে দেখিনি।আন্ধকারের মধ্যে এই আলো দেখতে খুবই ভালো লাগছে।

মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা চিকিৎসক সোহেল রানা  বলেনমঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলনের এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।ভাষা শহীদদের স্মরণ করার পাশাপাশি আশা করবো এই আলোর সঙ্গে কেটে যাবে সমস্ত অন্ধকার।

আয়োজকরা জানাননড়াইল একুশ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৯৭ সালে নড়াইলে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন শুরু হয়।প্রথমবার ১০ হাজার মোমবাতি জ্বালিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হলেও প্রতিবছর এর ব্যাপ্তি বেড়েছে।

একুশের আলো উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক  নাট্যব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার বলেনবিগত ২৬ বছর ধরে আমরা এখানে ভাষা শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জলন করছি। লাখো মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে আমরা কুসংস্কারধর্মীয় গোঁড়ামিসহ অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে চাইযা আমাদের ভাষা শহীদরা চেয়েছিলেন।

সব কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে দুদিন ধরে প্রায় হাজারখানেক স্বেচ্ছাসেবী লাখো মোমবাতি দিয়ে সাজিয়ে তোলে পুরো মাঠ। এসব কাজে সহযোগিতা করেন জেলা প্রশাসন।

সন্ধ্যায় মোমবাতিগুলো জ্বালিয়ে আলোকিত করা হয় পুরো এলাকা।মোমবাতির আলোয় দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে চারদিক।প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারসহ সন্ত্রাস  জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।